বিহু নাচে মন মজেনি এমন মানুষের দেখা মেলা ভার। সেই বিহু নাচের তথা অসমের অবশ্য ব্যবহার্য অন্যতম একটি সামগ্রী হল গামছা। লাল পাড় সাদা জমির ওপর সুতোর ফোঁড়ে সুন্দর ডিজাইন। দূর থেকে টাঙিয়ে রাখলে দেখে মনে হয় বুঝি ওড়না বা শাড়ি। অসমের সম্পদ এই গামছা বা আঞ্চলিক ভাষায় গামোসা এবারে জি আই ট্যাগ পেল। তার সঙ্গে সঙ্গী হল সেখানকার আধভাঙা শীতকালীন চাল চাকুয়া। যা সাধারণত স্টিকি রাইস হিসেবেই পরিচিত।
জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন অফ গুডস-এই তকমাটি থাকার অর্থ হল কোনও জিনিসের ভৌগলিক স্বত্ব সুরক্ষিত করে রাখা। আমাদেরব রাজ্যের রসগোল্লা, গোবিন্দভোগ চাল, দার্জিলিং-এর চা সহ আরও বেশ কিছু দ্রব্য সামগ্রী যেমন জিআই তকমা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রমাণিত হয়েছে, সেগুলি এরাজ্যেরই দ্রব্য, তেমনভাবেই অসমের দ্রব্য হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেল এবার থেকে সেখানকার বিশেষ গামছা এবং বিশেষ চাল। অসম তাদের গামছা এবং চালের মাধ্যমে বিশ্বের মন জয় করে নিয়ে পেল এই স্বীকৃতি। তবে এই প্রথম নয়, মুগা সিল্কের জিআই স্বীকৃতি অসম পেয়েছিল সেই ২০০৭ সালে। ২০১৫ সালে কার্বি আংলঙের আদা এবং তেজপুরের লিচুও পেয়েছিল জিআই তকমা।
অসমের নিজস্ব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেমন বিহু বা বিয়ের কোনও অনুষ্ঠানে এই গামছা বা গামোসাকে সম্মানের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যুবকেরা বিহু নাচের সময় মাথায় গামছা বেঁধে অংশগ্রহণ করে। সেই কারণে এই গামছাকে বিহুয়ানও বলা হয়। বিয়ের ক্ষেত্রেও গামোসাকে উপহার হিসেবে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্মান জানানোর জন্যেও ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি চাকুয়া চাল বা স্টিকি রাইসের কদরও বেড়ে চলেছে। সারা বিশ্বেই এই চাল গুরুত্ব পাচ্ছে। পুষ্টিগুণের দিক থেকেও অতুলনীয় এই চাল যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য। তবে রোজ এই চালের ভাত খাওয়া যায়না। প্রচুর জায়গায় এই চাল উৎপন্ন হলেও অসমের মাটিতে শীতকালে যে স্টিকি রাইস উৎপন্ন হয়, তা অতুলনীয় এবং অনন্য। এইভাবেই বিশ্বের বাজারে নিজেদের রাজ্যকে উৎকর্ষতার আসনে বসিয়ে দিল এই রাজ্য।