কিভাবে সব বাধা পেরিয়ে নিজের স্বপ্নকে বাস্তব করে তুললেন অভিনেত্রী কঙ্কনা হালদার?

বাবার হাত ধরেই শুরু হয় তাঁর অভিনয় জীবন। এরপর স্টেজ-থিয়েটার সবকিছু পেরিয়ে এখন হয়ে উঠেছেন টেলিপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী। তিনি কোন্নগর থেকে আসা অভিনেত্রী কঙ্কনা হালদার। সেই কোন্নগর থেকে উঠে আসা সেই মেয়ে এখন জনপ্রিয় চ্যানেলের এক ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্র।  

অনেক ছোট বয়সেই বাবাকে হারিয়েছে কঙ্কনা। তাই কোন্নগর নয়াপাড়ার বাড়িতে মা-দাদাকে নিয়ে ছোট্ট পরিবার গড়েছেন তিনি। কানাইপুরের কন্যা বিদ্যাপীঠ স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে রবীন্দ্রভারতী থেকে ড্রামাতে অনার্স স্নাতক হন তিনি। সেখান থেকে ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা শেষ করে বর্তমানে ‘আদালত ও একটি মেয়ে’ সিরিয়ালের মুখ্য চরিত্রের অভিনয় করছেন কঙ্কনা।

ছোট থেকেই বড় অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। আর সে স্বপ্ন তৈরি করেছিল তাঁর বাবা কাঞ্চন হালদার। তাঁর বাবা ছিলেন নাট্যজগতের কর্মী। বাবার মারা যাওয়ার পরেই সেই স্বপ্ন সফলের জেদ আরও বেড়ে যায়।

image_2024_04_02T10_12_24_691Z

শুধু ছোট পর্দা নয়, বড় পর্দাতেও কঙ্কনাকে দেখা গিয়েছে। একাধিক সিনেমা এবং ওটিটিতেও অভিনয় করেছেন তিনি। সদ্য তাঁকে দেখা গিয়েছিল গত বছর, দেব অভিনীত ‘বাঘাযতীন’ সিনেমায়। এবার  মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বনবিবি’তেও দেখা গিয়েছে অভিনেত্রীকে। এবার তাঁর ঝুলিতে রয়েছে আরও এক নতুন সিনেমা ‘হাতেখড়ি’।

কিন্তু রুপোলী পর্দায় কিভাবে সকলের কাছে পরিচিত হয়ে উঠলেন কঙ্কনা? সংবাদমাধ্যমে এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি।

তিনি জানিয়েছেন যে তাঁর জীবনের স্ট্রাগল পিরিয়ড এখনও শেষ হয়নি, এখনো চলছে। তিনি জানালেন যে কয়েক বছর আগে কলকাতাতেও থিয়েটার নাটক ও সিনেমার ছোট অভিনয় করার পরও সেভাবে কাজ হচ্ছিল না তাঁর। তা সেই সময় তিনি তাঁর লক্ষ্য পূরণের জন্য পাড়ি দেন মুম্বই শহরে।

সেখানে কাজ করার সময় কঙ্কনার কাছে একটা ফোন আসে। ধারাবাহিক ‘আদালত ও একটি মেয়ে’র মুখ্য চরিত্র দুর্গা সোরেনের ভূমিকা অভিনয় করার একটা অফার আসে। তিনি জানান যে দুর্গা সোরেন এমন এক চরিত্র যে পেশায় উকিল এবং ন্যায় বিচারের জন্য লড়াই করে। ফলে, এমন এক চরিত্রে অভিনয় করার লোভ সামলাতে না পেরে মুম্বই থেকে ফের টলিপাড়ায় ফিরে আসেন কঙ্কনা।

মেয়ের এমন কীর্তি দেখে কঙ্কনার মা অপর্ণা হালদার জানিয়েছেন যে তাঁর স্বামীর খুব ইচ্ছা ছিল মেয়েকে অভিনেত্রী বানাবেন। কিন্তু মেয়ের সাফল্য বা মেয়ের প্রচেষ্টা কোনটাই দেখে যেতে পারেননি তিনি। গ্রাম  পেরিয়ে শহরে গিয়ে কাজ করাটা খুবই কষ্ট সাধ্য ছিল। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও কঠিন হয়ে যায়। কঙ্কনাকে পাড়া-প্রতিবেশী থেকে আত্মীয়-স্বজন অনেকের থেকেই কটু কথা শুনতে হয়েছিল। তবে নিজের মেয়ের ওপর অগাধ বিশ্বাস ছিল তাঁর এবং এখনও সেই বিশ্বাস ও ভরসা রয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন যে এখন কঙ্কণাকে টিভির পর্দায় দেখা যায়। সেইসময় যারা তাঁর মেয়েকে কটু কথা শোনাতেন, তাঁরাও আজ প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...