কৃত্রিম হাতেও স্নায়ুর সাড়া

কৃত্রিম হাতেও স্নায়ুর সাড়া

মাঝ পথে ছেড়েছিলেন কলেজ। সুলভ মূল্যে কৃত্রিম হাত বানানোর কৃতিত্ব এস জুটল তাঁর কপালেই।

প্রশান্ত্‌ গাড়ে। মধ্যপ্রদেশের খাণ্ড্‌য়া জেলার বছর সাতাশের এক যুবক। ছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিং এর সফল প্রতিভাবান একজন ছাত্র।

শেষ বর্ষে এসে ছাড়লেন কলেজ। কারণ? ইঞ্জিনিয়ারিং এর গঁতে বাঁধা সিলেবাস আর মন টানছেনা যুবকের। চোখে টলটল করছে নতুন কিছু করার স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্নের ডাকেই বেরিয়ে পড়লেন কলেজ থেকে।

সেসময় দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন কাজের জন্য। ফেসবুকের একটি পোস্ট নজর কারে।ম্যাসাচুসেটস্‌ ইন্সিটিউট এর একটি ডিসট্যান্ট কোর্স।রোবটিক্স।

পুনেতে সামনাসামনি আসেন একজন বাচ্ছা মেয়ের। জন্ম থেকেই দুটো হাত নেই। ভারত এবং বিদেশে কৃত্রিম হাত লাগানোর খরচা তখন আকাশ ছোঁয়া। স্থির করে ফেললেন নিজের লক্ষ্য।

ভারতে দৈনিক চল্লিশ হাজার মানুষ হাত খোয়ান। তাদের মধ্যে পঁচাশি শতাংশ ওই ভাবেই জীবন কাটিয়ে দেন।

শুরু হল কাজ।কৃত্রিম হাত বানানোর।বয়স তখন ২৩। নতুন ভাবনা নিয়ে রাজস্থানের জয়পুরের দিকে পা বাড়ালেন প্রশান্ত্‌। সেখানকার এক কোম্পানী প্রাথমিক পর্যায়ে তাঁর ভাবনাকে স্বীকৃতি দেয়।

পিঠে তখন নিরাশার পিঠ চাপড়ানো চলছে। একসময় পয়সা না থাকলে এক বেলা খেয়েও কাটিয়েছেন। শেষমেশ ইউ এস এ থেকে এল ডাক।

hand-1

নিজের অভিনব ভাবনা নিয়ে হাজির হলেন সেখানে। কৃত্রিম হাত বানানোর জন্য উপহার পেলেন দশটি মেশিন। তখন ২০১৬

আর এখন! গত চার বছরে প্রায় সাতশো হাত জোড়া লেগেছে অনেক মানুষের দেহে। বিনামূল্যে! তিনশো হাত হয়েছে বিক্রি।

এই হাতের বাজার মূল্য পঞ্চাশ হাজার টাকা। তুলতে সক্ষম দশ কেজি ওজন। গ্যারান্টি থাকে তিন বছরের।

প্রশান্ত্‌ তাঁর কৃতিত্বের ভার দিয়েছেন নিকোলাস হাচেট কে। একটা অ্যাকসিডেন্টে নিজের হাত খোয়ানোর পর নিজের চেষ্টাতেই বায়োনিক হাত তৈরি করে জুড়েছিলেন দেহে।

ইনালি ওয়াহানে। সর্বক্ষণের সঙ্গী। ভালোবাসা। তাঁর জন্মদিনে ৪ মে, ২০১৬ তে, তাঁর নামেই প্রাশান্‌ত্‌ প্রথম বাজারে আনেন এই বায়োনিক হাত।নাম দেন ইনালি আর্ম।

বাজার চলতি যেসব কৃত্রিম হাত পাওয়া যায় সেগুলো মাংসপেশীর হেলদোলের সঙ্গেই কাজ করতে সক্ষম। ইনালি সেখানে মস্তিস্কের স্নায়ু তরঙ্গ অনুযায়ী করতে পারে কাজ।

প্রাশান্‌ত্‌ এর বর্তমান অভীক্ষা এই যে যেভাবেই হোক এই কৃত্রিম হাতকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল গুলিতে পৌঁছে দেওয়া। সেই মানুষগুলির কাছে যারা এই হাত লাগানোর ব্যয়ভারে অক্ষম।সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।

তাঁর সদস্য দল ইতিমধ্যেই ১৫০০ হাত পৌঁছে দিতে পেরেছে।নতুন স্বপ্ন লালন করাও শুরু হয়ে গিয়েছে। এবারে আর হাত নয়, শরীরের নিম্নাঙ্গের বিভিন্ন অংশ তৈরির পর্যায় তাঁদের রাতের ঘুম কাবার হওয়ার পালা।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...