পৃথিবীর বুকে বাস করা সর্পকুলদের মধ্যে অন্যতম একটি হলো অ্যানাকোন্ডা। বিভিন্ন সিনেমাতে আমরা ছোটবেলা থেকেই অ্যানাকোন্ডা দেখেছি। মূলত আমাজনের জঙ্গলে দেখা মেলে এই সাপের। চেহারা খুব বিশাল হলেও এই সাপের কিন্তু কোনো বিষ নেই। তাই বলে এই সাপের থেকে কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই তাও কিন্তু নয়। এই সাপ তার গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে একটি মানুষকে পিষে তার শরীরের সমস্ত হাড়গোড় ভেঙে তাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলতে পারে। এই সাপ একটি গোটা গরু বা মহিষকেও একবারে গিলে ফেলতে পারে। তাই এই সাপ নিয়ে মানুষের কৌতূহল কিছুটা বেশিই। বিশেষ করে বিভিন্ন সিনেমাতে এই সাপের দেখা মেলায় এই নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে উত্তেজনা একটু বেশি।
কিন্তু আমাজনের জঙ্গলে গিয়ে এই সাপের সাথে সাক্ষাৎ করা তো আর সম্ভব নয়। তাহলে কি উপায়? এই সাপকে কি সারাজীবন টিভির পর্দায় দেখেই কাটাতে হবে? না, একদমই নয়। খাস কলকাতার বুকে বসেই এবার অ্যানাকোন্ডা দর্শন করতে পারবেন সকলে। এবার থেকে আলিপুর চিড়িয়াখানায় গেলেই দেখা মিলবে এই প্রজাতির সাপের। সম্প্রতি কলকাতায় এসে পৌঁছেছে হলুদ অ্যানাকোন্ডা। তাও আবার একটা দুটো নয়। মোট চারটি অ্যানাকোন্ডা এসে পৌঁছেছে কলকাতায়। আপাতত নতুন অতিথিদের নিয়েই ব্যস্ত আলিপুর চিড়িয়াখানার সরীসৃপ বিভাগ। গত বৃহস্পতিবার ভোরবেলা মাদ্রাজ ক্রোকোডাইল ব্যাঙ্ক অ্যান্ড সেন্টার ফর হার্পেটোলজি থেকে শহরে অবতরণ ঘটেছে এই চারটি সরীসৃপের। এর বদলে কলকাতা থেকে চেন্নাইতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৪টি মনোক্লেড কোবরা এবং ৪টি ব্র্যান্ডেড ক্রেট, বাংলায় যাকে যথাক্রমে বলা হয় কেউটে এবং শাঁখামুটি ।
প্রায় দেড় বছর ধরে কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায় অ্যানাকোন্ডা আনার প্রস্তুতি চলছিল। অবশেষে তাদের আনা সম্ভব হলো। জানা গেছে, তাদের জন্য তৈরী করা হয়েছে একটি তিন ফুটের জলাশয়। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এক মাস পর্যবেক্ষণে রাখার পর তাদের দর্শকের সামনে আনা হবে। এই সাপগুলির বর্তমান দৈর্ঘ্য রয়েছে চার থেকে সাড়ে চার ফুট। এই সাপগুলি ১৬ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। আর ওজন হতে পারে ১০০ কেজি। তাই এবার থেকে এদের দেখার জন্য আলিপুর চিড়িয়াখানায় যে কচিকাঁচাদের সাথে বড়দেরও ভিড় জমবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।