ভারতের শিল্প এবং বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আরো উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগ করার লক্ষ্যে প্রবীণ ভারতীয় নাগরিক, বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ এবং শিল্প জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এক প্রতিনিধিদল সম্প্রতি জার্মানির প্রথম সারির সংস্থা বিএমডব্লিউ, এয়ারবাস, সিমেন্সের উৎপাদন এবং গবেষণাকেন্দ্রগুলি ঘুরে দেখেন। ভারতীয় শিল্পে কিভাবে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায়, সেই বিষয়ে খোঁজ খবর করেন তাঁরা। হানোফারে অনুষ্ঠিত বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎপাদন সংক্রান্ত মেলা ঘুরে দেখে ওই প্রতিনিধি দলটি। ওই দলে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের বিশিষ্ট বিজ্ঞানীরাও ছিলেন। হানোফারের শিল্প মেলায় 'ইন্ডিয়া ইনভেস্টমেন্ট মিট' শীর্ষক আলোচনায় বেকহফ, সিমেন্স এবং নোর্ডড্রাইভ সিস্টেমস-এর মত সংস্থাগুলি অংশ নিয়েছিল। মিউনিখে বিএমডব্লিউ, হামবুর্গে এয়ারবাস, বার্লিনে সিমেন্সের কারখানা ঘুরে দেখেন তাঁরা। বাণিজ্য এবং ভারী শিল্প মন্ত্রকের সহায়তায় ভারতের প্রযুক্তি রপ্তানির সর্বোচ্চ সংস্থা ইইপিসি ইন্ডিয়া, এই উচ্চপর্যায়ের সফরের আয়োজন সংগঠিত করেছিল।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন ভারী শিল্প দফতরের সচিব ডঃ এ আর সিহাগ এবং যুগ্ম সচিব শ্রীমতী সুকৃতি লিখি। এই প্রসংগে ডঃ সিহাগ বলেন, ভারতের অর্থনীতিতে বর্তমানে উৎপাদন ক্ষেত্রের অবদান ১৮ শতাংশ। এই পরিমান ভবিষ্যতে ২৫ শতাংশ করার ইচ্ছা আছে। ইইপিসি ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান শ্রী রবি সেহগল বলেন, বিশ্বের বাজারের চাহিদা অনুসারে ভারতীয় সংস্থাগুলির উদ্ভাবন এবং দক্ষতার উন্নতি প্রয়োজন। এই সফরে ভারতীয় দূতাবাস এবং হামবুর্গে উপ-দূতাবাস সাহায্য করেছিল।
গতকাল এক অনুষ্ঠানে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি শ্রী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, বিশ্ব জুড়ে আর্থিক মন্দা ও অর্থ ব্যবস্থায় শিথিলতার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির নমনীয়তার জন্য সেগুলি বিভিন্ন মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির নিজেদের দায়িত্ব সুনির্দিষ্টভাবে পালন করার পর এখন ভারতের উন্নয়নের ধারায় সর্বাগ্রে অবস্থান করছে বলেও তিনি অভিমত পোষণ করেন। তাঁর মতে ব্যাপক আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং সামগ্রিক বিকাশ বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। সবথেকে বঞ্চিত মানুষের কাছে উন্নয়নের সুফল না পৌঁছলে উন্নয়নের প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণ হয়না। তিনি আরও বলেন, ব্যাঙ্কগুলির বিপুল পরিমাণ অনুৎপাদক সম্পদের প্রেক্ষিতে ভারতীয় ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। অনুৎপাদক সম্পদ নিয়ন্ত্রণ তথা এই ধরণের সম্পদের ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে এক কার্যকর ও দক্ষ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর জোর দেন তিনি। এই ব্যবস্থায় যে ঘাটতি রয়েছে, তা দূর করা প্রয়োজন যাতে ওই ঘাটতিগুলি থেকে সুযোগের অপব্যবহার রোধ করা যায় বলে জানান তিনি। শ্রী নাইডু ঋণ খেলাপিদের ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার ক্ষেত্রে আগাম ব্যবস্থা গ্রহণে প্রযুক্তি এবং তথ্যের ব্যবহারের পাশাপাশি, অনুৎপাদক সম্পদ লুকিয়ে রাখার প্রচেষ্টাকে চিহ্নিত করে এক মজবুত ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ দেন। আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের বিষয়গুলিকে বিবেচনায় রেখে এগুলির সুযোগসুবিধা গ্রহণে আরও সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ব্যাংকগুলির প্রতি আহ্বান জানান শ্রী নাইডু।