শরীর-স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হয় অনেককিছুই। সেরকমই আবার সংযোজিত হয় অনেক নতুন ধরণের খাবার। পুষ্টিগুণের কথা মাথায় রেখে ডায়েট চার্ট তৈরী করেন ডায়াটেশিয়ানরা। সবক্ষেত্রেই চিকিৎসকেরা একটি জিনিসকে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলেন। হ্যাঁ, একদমই ঠিক ধরেছেন।লবণের কথাই বলা হচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে, একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সারাদিনে এক চা-চামচের বেশি নুন খাওয়া একেবারেই উচিৎ নয়।কারণ লবণের প্রধান উপাদান হলো সোডিয়াম। সারাদিনে একজন প্রাপ্তবয়স মানুষের সোডিয়াম ইনটেকের পরিমান হওয়া উচিৎ ম্যাক্সিমাম ২ গ্রাম।লবণের পরিমান বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে হানা দিতে থাকে উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের অসুখ, স্ট্রোকের সম্ভাবনার মতো একাধিক আশংকা। এইসব রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে গেলে কি করা উচিৎ জানেন?
অবশ্যই খাদ্যে লবণের পরিমান কমানো উচিত। সারাদিনে মিনিমাম ৩৫১০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম ইনটেক প্রয়োজন।তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক কতটা সোডিয়াম আর পটাসিয়াম শরীরের প্রয়োজন আর কোন কোন খাবারে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পটাসিয়াম..
নার্ভকে উদ্দীপ্ত করার জন্য প্রয়োজন সোডিয়ামের।শরীরের মাংসপেশির কনস্ট্রাকশন ও রিল্যাক্সেশনের জন্যেও প্রয়োজন সোডিয়াম। কিন্তু ঠিক কতটা পরিমান সোডিয়াম প্রয়োজন এই কাজগুলি মসৃণভাবে করার জন্য? চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, একজন সুস্থ মানুষের সারাদিনে মোট ৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম প্রয়োজন শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্মের জন্য। পরিমান তার থেকে বেড়ে গেলেই বিপদ। এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতেই আমাদের ভরসা পটাসিয়াম।
কিন্তু, এটা কি জানা আছে যে প্রতি হাই পটাসিয়ামযুক্ত খাবারের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে সোডিয়াম কনটেন্ট? তাই সোডিয়ামকে বাদ দিয়ে পটাসিয়াম ইনটেক কখনোই সম্ভব নয়। এমত অবস্থায় কি করা উচিৎ?
জানা গেছে, প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ টি মাঝারি মাপের আলু খেলে কিংবা সারাদিনে ৫ থেকে ৬ গ্লাস দুধ খেলে শরীরে পটাসিয়ামের অভাব পূরণ হয়।কিন্তু সোডিয়াম ইনটেক কমাতে চাইলে আবার দুধ ও আলু খাওয়া যাবে না।
তাহলে উপায়? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রয়োজন মতো পটাসিয়াম পেতে গেলে নুন বা নোনতা খাবার কমিয়ে সুষম খাবার খেতে শুরু করা উচিৎ। এতে উভয় দিকই রক্ষা পায়।সুষম আহারের ফলে শরীরে পটাসিয়ামের অভাব পূরণ হয় বলেই মত প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকমহল। তবুও এর সাথে কিছুটা পরিমান সোডিয়ামের প্রবেশ ঘটবে শরীরে।তাতে খুব একটা সমস্যা নেই বলেই জানা গেছে। অতিরিক্ত সোডিয়াম ঘামের মাধ্যমেই শরীর থেকে নির্গত হয়ে যাবে।প্রতিদিন নিয়ম করে ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট হালকা ব্যায়াম করলে শরীর থেকে যে ঘাম নিঃসরণ হবে তাতেই অতিরিক্ত সোডিয়াম শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে।
এবার আসা যাক পটাসিয়ামের কাজে। রক্তচাপ বশে রাখা, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমান কমানো, হার্টের নানা সমস্যা, হাড় ও পেশির সুস্বাস্থ্যের জন্যেও পটাসিয়াম খুব উপকারী। শরীরে পটাসিয়াম ও সোডিয়াম উভয়েরই প্রয়োজন। এই দুইয়ের পর্যাপ্ত উৎস হলো ডাবের জল।এছাড়াও মিষ্টি আলু, পালং শাক, আলু, টমেটো, বিট, কমলা লেবু, পেস্তা, কিশমিশ প্রভৃতি খাবারেও উপস্থিত থাকে পর্যাপ্ত পরিমান সোডিয়াম ও পটাসিয়াম।