দ্বিশতবর্ষে নাইটিঙ্গেল

পোশাকী নাম ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল। কিন্তু বিশ্বের মানুষ তাঁকে জানে ' দ্য লেডি ইউথ দ্য ল্যাম্প' হিসেবেই। 'দীপ হাতে মহিলা'।

আর্ত,আতুর মানুষের সেবায় যিনি জীবন উৎসর্গ করেছেন। একাই বদলে দিয়েছিলেন পৃথিবীর ইতিহাস।

সময়টা তখন বড় অস্থির। ক্রিমিয়ার যুদ্ধ চলছে। ফ্লোরেন্স গিয়েছিলেন আহত সেনাদের শিবিরে। তাঁদের দেখার কেউ নেই। যন্ত্রণায় কাতর সেনারা। যুদ্ধ ক্ষেত্রে আহত সেনাদের চিকিৎসা হলেও সেবা করার লোক কোথায়। ফ্লোরেন্স একা দায়িত্ব নিয়েছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে আহত ও বিপন্নদের সহায়তা দিতে ১৮৫৪ সালের ২১ অক্টোবর তিনি এবং তার কাছেই প্রশিক্ষিত ৩৮ জন সেবিকা, তার আত্মীয় মেই স্মিথ এবং ১৫ ক্যাথোলিক নান সহ ক্রিমিয়ায় উপস্থিত হন

সারাদিন ক্ষত সারাবার কাজ করতেন। গভীর রাতেও তাঁর কাজ ফুরত না। একটা মোমবাতি হাতে নিয়ে শিবিরে ঘুরে ঘুরে দেখতেন কারও কোথাও অসুবিধা হচ্ছে কিনা।

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল এর এই মনোভাব একেবারে ছোটবেলা থেকেই। রাস্তায় আহত পশু- পাখি  দেখলেও যত্ন করে তুলে নিয়ে আসতেন বাড়িতে। সুস্থ করে তাদের ফিরিয়ে দিতেন।

আজকের এই অতিমারীর মরসুমে

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মের ২০০ বছর পূর্ণ হল।

 ১৮২০ সালের ১২ মে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মের স্মৃতিতে দিনটিকে বিশ্ব নার্স বা নার্সিং দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

করোনা আক্রান্ত বিশ্বে মানুষকে জীবন ফিরিয়ে দিতে গোটা পৃথিবীতেই ডাক্তার এবং নার্সরা যেভাবে যুদ্ধ চালাচ্ছেন, তাতে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের লড়াই যেন আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে এই সময়ে দাঁড়িয়ে।

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল জন্মেছিলেন ইতালিতে, কিন্তু বড় হয়ে ওঠা ইংল্যান্ডে। বাবা উইলিয়াম এডওয়ার্ড নাইটিঙ্গেল এবং মা ফ্রান্সিস নাইটিঙ্গেল। অভিজাত পরিবারের সন্তান ফ্লোরেন্স পুরো জীবনটাই নার্সিংকে দিয়েছিলেন। পড়াশোনা, চর্চা সবকিছুতেই মিশেছিল নার্সিং।  ব্যবহারিক নার্সিং সেবা নিয়ে তিনি যেমন দেশ-বিদেশে ছুটেছেন, তেমনি নার্সিং শিক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি দিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। লন্ডনের ‘কেয়ার অব সিক জেন্টলওমেন ইনিস্টিটিউট’র তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন।

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল তার কাজকে  সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তিনি কোনও নির্দিষ্ট দেশের মানুষ নন, তিনি সারা বিশ্বের। যেখানেই আর্ত মানুষ সেখানেই তিনি।  ভারতবর্ষের গ্রামীণ মানুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর গবেষণা চালান। যা ভারতবর্ষে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...