চিনা স্বাদের কলকাতা

লাল বাজার। তার ঠিক পিছনেই পোদ্দার কোর্ট। তার ঠিক পাশের সরু গলিটা সান ইয়াৎ সেন স্ট্রিট। সেন্ট্রাল মেট্রো থেকে বৌবাজারের দিকে ৫ মিনিটের হাঁটাপথ, বাঁদিকে একটা ছোট মসজিদ সাধারণ নাম ‘ওল্ড চায়না বাজার’। কলকাতায় বসে ট্র্যাডিশনাল চীনা খাবারের স্বাদ নিতে চাইলে আসতেই হবে এখানে।    

FotoJet - 2019-07-23T170447.753

রবিবারের সকাল। ভোর ৬টা থেকে সকাল ৮ঃ৩০ টা পর্যন্ত চলে চিনা খাবারের হাট। ‘অথেনটিক চাইনিক ব্রেকফাস্টের’ জন্য বিখ্যাত। সপ্তাহের অন্য দিনগুলোতেও বাজার বসে। কিন্তু সাদাসিধা বাজারটা বদলে যায় রোববার। দুর থেকে মোমো, সুপ, ডাম্পলিং-এর গন্ধ বলে দেয় জায়গাটা টেরিটি বাজার। দরদাম। ভিড়। কলকাতার ভিতর যেন অন্য একটা শহর।  

FotoJet - 2019-07-23T170226.973

এখানে অনেকেই নিজেদের বাড়ির হেঁশেলে খাবার তৈরি করে এনে বিক্রি করেন। ডাম্পলিং, ফিশবল সুপ, পর্ক চপস, কোকোনাট বল, স্টিকি রাইস, চিকেন থাই পাও, প্রন ওয়েফার, সসেজ, রাইস জাং  মেইন কোর্স থেকে সাইড ডিশ, ডেসার্ট সবই মেলে। বিফ, পর্ক, চিকেন, সি ফুড, ভেজ। এই শহরের নামকরা চাইনিজ রেস্তরাঁ থেকে অনেকটাই আলাদা এসবের স্বাদ।   

FotoJet - 2019-07-23T170415.861

১৭৯৮ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস-এর সময়ে কলকাতায় প্রথম চিনা প্রবেশ ঘটেছিল। টং অ্যাছিউ নামে এক ব্যবসায়ী কলকাতায় আসেন। হেস্টিংসের অনুমতি সাপেক্ষে কলকাতা থেকে ৩৩ কিলোমিটার দূরে বজবজে অছিপুরে একটি চিনির মিল কেনেন তিনি। কলকাতা পুলিশের পুরনো নথি অনুযায়ী ১৮৩৭ সালে কলকাতায় প্রায় ৩৬২ চিনার বাস ছিল। উনিশ শতকে সংখ্যাটা ২০, ০০০ ছাড়িয়ে যায়।

FotoJet - 2019-07-23T170340.857

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং ভারতের স্বাধীনতার পর কলকাতায় চিনা সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে থাকে। কলকাতার প্রাচীন চিনে পাড়া বলতে মধ্য কলকাতার টেরিটি বাজার সংলগ্ন অঞ্চলকেই বোঝায়। পরে চিনা হাক্কা সম্প্রদায়ের মানুষরা ট্যাংরা- তপসিয়া অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় চিনা দাঁতের ডাক্তার, চীনা কাঠের মিস্ত্রি আর চিনা জুতোর দোকান এই তিনের কদর ছিল খুব বেশি। অনেক পরে এই শহর চিনে খাবারের প্রেমে পড়ে।   

FotoJet - 2019-07-23T170255.456

 কলকাতা শহরে চিনা মানুষরা সংখ্যায় কমে গেলেও টেরিটি বাজারে রবিবারের সকালের ব্রেকফাস্ট বাজার একই আছে। জুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে স্বাদ হয়ত খানিক ব্দলেছে, কিন্তু ট্র্যাডিশনে একই।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...