ব্যথা কমাচ্ছে ‘ফারাও ফায়ার ম্যাসাজ’

প্রাচীন নানা চিকিৎসাপদ্ধতির মধ্যে আগুনের ব্যবহার একেবারে অচেনা নয়। আধুনিক কালে ‘কাপিং থেরাপি’,হিজমা’ বহুল প্রচলিত হলেও, এভাবে জ্বলন্ত তোয়ালে দিয়ে ব্যথা নিরাময়ের কথা মনে হয় আগে শোনেননি কেউ। কিন্তু এই অদ্ভুত ম্যাসাজের মাধ্যমে মিশরের এক ম্যাসিওর  তাঁর রোগীদের পেশির যন্ত্রণা  ১০০%   নিরাময় করছেন, অন্তত  রোগীদের অভিজ্ঞতা ও এর চাহিদা সেই বার্তাই দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বিষয়টি।   

 মিশরের নীল নদের বদ্বীপে ঘারবিয়া এলাকার ম্যাসিওর বছর ৩৫-এর  আবদেল রহিম সইদ  সম্প্রতি এই পদ্ধতি ব্যবহার করছেন তার স্পা ক্লিনিকে । তবে এই ম্যাসাজের আগে কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করে তবে সাক্ষাৎ হয় 'ফায়ার ম্যাসাজ’এর সাথে। আগুন ব্যবহারের পূর্বে সেরে ফেলা হয় প্রথাগত ম্যাসাজ । প্রথমে শুরুটা হয় তেল দিয়ে, তারপর আসে সুগন্ধী ফুল থেকে তৈরি ওষুধ। লক্ষ্য -শরীরের যন্ত্রণার জায়গায় রক্ত-সঞ্চালন বাড়়িয়ে তোলা। শেষ ধাপে আগুনের পালা আবদেল ওই  ব্যক্তির পিঠের উপর বেশ কয়েকটি মোটা তোয়ালের পরত দেন যাতে আগুন সরাসরি ত্বক স্পর্শ না করে । সবার উপরে চাপিয়ে দেন অ্যালকোহলে ভেজা একটি তোয়ালে । তাতে জ্বালিয়ে দেন আগুন । সেই আগুন ত্বক স্পর্শ না করতে পারলেও তার তাপ পৌঁছে যায় পেশি পর্যন্ত। আবদেলের মতে , এভাবে আগুনের তাপের ফলে শরীর থেকে অতিরিক্ত আর্দ্রতা বেরিয়ে যায়। এবং পেশিতে যন্ত্রণার উপশম হয়। কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনির সমস্যা, হিমোফিলিয়া রোগাক্রান্ত  ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি  একেবারেই  প্রযোজ্য নয় । 

কিন্তু এতো ম্যাসাজের পদ্ধতি থাকতে এই ভাবনা কেন ? কারণ অবশ্যই কিছুটা নতুনত্ব আর ব্যাথার দ্রুত নিষ্কৃতি। কিন্তু ‘আগুন ম্যাসাজ’ শুরুর আগে দীর্ঘ পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হয়েছে তার । যদিও মরক্কোর এক দক্ষ ম্যাসিওয়ের কাছে তিনি এই পদ্ধতি শেখেন। এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে মিশরের নানা শিক্ষা সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া ম্যাসাজের সার্টিফিকেট ও একাধিক অভিজ্ঞতা।

এক্ষেত্রে অবশ্য আবদেলের কাছে ম্যাসাজ নেওয়া বেশ কিছু উপকৃত মানুষের কথায় আবদেলের কাছে দু’বার এই আগুন ম্যাসাজ নেওয়ার পর তারা এখন ১০০ শতাংশ সুস্থ। কিন্তু আবেদলের মতে ,এর কার্যকারিতা বজায় রাখতে এই ম্যাসেজ মাঝে মধ্যেই নেওয়া ভালো -অবশ্যই ব্যথার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব বুঝে।তবে এই ম্যাসাজের ঐতিহাসিক সূত্র পাওয়া গেছে হায়রোগ্লিফিক্সের একটা অংশের সাম্প্রতিক গবেষণায় ,যা থেকে জানা যায় ফারাওরা এই ধরনের ম্যাসাজে অভ্যস্ত ছিলেন । তাই আপাতত কলকাতা নয় ‘ফারাও ফায়ার ম্যাসেজ ‘এর স্বাদ পেতে যেতে হবে এর জন্মভূমি মিশরে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...