শুধুমাত্র সবুজ বাজিই পরিবেশ বান্ধব। এই মর্মে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে আলোর বাজির ক্ষতি রুখতে সবুজ বাজি বানানোর নির্দেশ দেওয়া হয় সরকারকে। সেই অনুযায়ী ইতিমধ্যেই সবুজ বাজি তৈরির ফর্মুলা উদ্ভাবন করেছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বা বিজ্ঞানীরা বারবারই বলে এসেছেন, শব্দ বাজির তুলনায় আলোর বাজির কোনও অংশে কম ক্ষতিকারক নয়।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সেই তথ্যই সাধারণ মানুষকে জানানোর পরিকল্পনা নিচ্ছে। পর্ষদের পক্ষ থেকে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র জানান, এই বছর নতুন করে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার সময় নেই, কিন্তু আগামীবছর এই সংক্রান্ত সচেতনতামূলক তথ্য সাধারণ মানুষের দৃষ্টিগোচরে আনা হবে। পর্ষদ সূত্রের খবর, আপাতত আলোর বাজি বন্ধ করার ক্ষেত্রে কোনওরকম বিধিনিষেধ নেই। সেক্ষেত্রে আলোর বাজির জন্য কোনওরকম বিধিনিষেধ নেই। এই কারণেই আলোর বাজির ক্ষেত্রেও সাধারণ মানুষকে সচেতন করা প্রয়োজন। পর্ষদ সূত্রে দাবি, যদিও বহু মানুষ আজকাল মুখে মাস্ক লাগিয়ে বাজি ফাটান, তবু তার ভেতর দিয়েও ক্ষতিকারক ধোঁয়া শরীরের ভেতরে প্রবেশ করে। অথচ সেই ধোঁয়া শরীরের যে কতটা ক্ষতি করছে, সেই বিষয়ে সাধারণ মানুষ তেমনভাবে অবগতই নন।
বারবার চিকিৎসকরা সচেতন করছেন, অথচ আলোর বাজির ব্যবহার একটুও কমেনি। শব্দবাজির দাপট কমানোর জন্য অনেকেই আলোর বাজির দিকে আগ্রহ দেখান। কিন্তু সবার অজ্ঞতার কারণে যে বিষয়ের দিকে মানুষ ঝুঁকছে, সেই দিকেই ক্ষতিকারক বিষয়ের যথেষ্ট রসদ হয়েছে। সেই কারণেই মূলত কোন আলোর বাজির ধোঁয়া শরীরের কি পরিমান ক্ষতি করছে, সেই তথ্যই গবেষণার মাধ্যমে পর্ষদ সামনে আনতে চাইছে। সম্পূর্ণ বন্ধ করে নয়, সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে বাজির ক্ষতি সাধারণকে বোঝাতেই এই পরিকল্পনা। উল্লেখ্য, শব্দবাজি রুখতে গিয়ে আলোর বাজির ধোঁয়া শরীরের কি পরিমান ক্ষতি হযা, সেই তথ্যই এই গবেষণার মাধ্যমে আনতে চাইছে পর্ষদ। এই বিষয়ে পর্ষদের এক কর্তা জানান, শব্দবাজি বন্ধ করতে গিয়ে আলোর বাজির দাপট চলেছিল গতবছর। কিন্তু বায়ু দূষণ বেড়েছিল লক্ষ্যণীয়ভাবে। তাই স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যায়, ওই আলোর বাজিও কতটা ক্ষতিকারক। পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা(পি এম ১০) যেখানে বাতাসের প্রতি ঘন মিটারে মাত্র ১০০ মাইক্রোগ্রাম থাকার কথা, সেখানে গতবছর কালীপুজোর দিন তা ছিল ১৭০০ মাইক্রোগ্রাম এবং প্রতিমা বিসর্জনের দিন সেই পরিমাপ ছিল ১২০০ মাইক্রোগ্রাম।