শুধু ছাত্রছাত্রীরাই নয়, সকলের জন্যই খোলা থাকবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির দ্বার, বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক মারফত চলতি বছরেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। এবার তাতে নয়া মাত্রা যোগ হল। সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরী কক্ষে স্থাপন হতে চলেছে ‘সিনেমা কর্ণার’। এতদিন সিনেমাপ্রেমী পড়ুয়ারা ক্লাস কামাই করে বাইরে গিয়ে সিনেমা চর্চা করতো, মূলত তাদের কথা মাথায় রেখেই এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজস্ট্রীট ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর অন্দরে প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে ‘সিনেমা কর্নার’।
পাঠাগারে বসে সিনেমা নিয়ে পড়াশোনা তো রয়েছেই, পড়াশোনার পাশাপাশি এবার জাতীয় ও আন্তর্জাতীয় স্তরের সিনেমা দেখার সুযোগ পাবেন আগ্রহী ছাত্রছাত্রীরা। সিনেমা প্রদর্শনের জন্য একটি আলাদা কক্ষ বেছে নেওয়া হয়েছে। এই মূহুর্তে বিষয়টি প্রাথমিক স্তরে থাকায়, আপাতত ১৫ জন একসঙ্গে বসে সিনেমা দেখার সুযোগ পাবেন। থাকবে একটি বড় এলইডি টিভি সহ একটি সাউন্ড সিস্টেম। সিনেমার ডিভিডির জন্য রাখা হবে পৃথক লাইব্রেরী। ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি সাধারণ সিনেমাপ্রেমী মানুষেরাও নির্দ্বিধায় এই উদ্যোগে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরী পরিচালক সৌমিত্র সরকার জানান, কেবল ছাত্রছাত্রীরাই তো শুধু নয়, সারা পৃথিবী থেকে প্রতিদিন বহু স্কলার আমাদের লাইব্রেরী ব্যবহার করতে আসেন। তাদের কথাও আমাদের বিবেচনায় রয়েছে। এমনকি সিনেমা দেখতে আসা মানুষেরা আমাদের কোনো নতুন বা অজ্ঞাত সিনেমা প্রদর্শনের সুপরামর্শ দিলে আমরা সেই মতো ব্যবস্থাগ্রহণ করব।
অন্যদিকে জানা যাচ্ছে, বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লাইব্রেরীর শিরোপা পাওয়া সত্ত্বেও তেমন পাঠকের দেখা নেই লাইব্রেরীতে। পড়ুয়াদের লাইব্রেরীমুখী করতেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ পড়ুয়া কস্মিনকালেও লাইব্রেরীমুখী হয় না, সিনেমা দেখার আগ্রহে অনেকেই লাইব্রেরীতে আসবে এবং তাতে বইয়ের প্রতি ধীরে ধীরে আগ্রহ জন্মাবে, এমনটাই মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিয়ে একটি বিবৃতিতে উপাচার্য সোনালি বন্দোপাধ্যায় জানান, ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরাও যাতে লাইব্রেরীতে অর্থবহ সময় কাটাতে পারেন, সে জন্যেই এই উদ্যোগ। এর মাধ্যমে লাইব্রেরীকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা সম্ভব।
সিনেমা কর্নার খোলার জন্য ইতিমধ্যেই সিনেমা সংক্রান্ত ২০০০ বই লাইব্রেরী কক্ষে নিয়ে আসা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন পাঠ্যসূচিতে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘পথের পাঁচালী’, ‘ভুবনসোম’ ইত্যাদি সিনেমার আলোচনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ছবি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউটের থেকে পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।