সমাজের মূল স্রোত থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয় ওদের। রাস্তায়, ট্রেনে, পথেঘাটে কিংবা পার্কে ভিক্ষাই যেন জীবিকা অর্জনের একমাত্র নিয়তি। কারণ সমাজের চোখে ওরা ‘অস্বাভাবিক’ । তাই মূল ধারার কোনও কাজে সুযোগ মেলে না।
মানুষগুলোর একক স্বাধীন পরিচয়কে গ্রহণ করতে সমাজ নারাজ। ওদের একটাই পরিচয় ওরা ‘নপুংসক’।
যাদের গা থেকে ব্যক্তি পরিচয়টাকে ঘষে- মেজে মুছে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত শুধুমাত্র একটা সম্প্রদায়ের অংশ হিসেবে কোন রকমে টেনেটুনে বেঁচে থাকা। সেখানে কোনও স্বপ্ন থাকতে পারে না, স্বাধীন ভাবনা থাকতে পারে না, প্যাশন থাকতে পারে না। মস্তিষ্ক,মনন, আত্ম অনুসন্ধানকে অস্বীকার করে কেবল কোনও রকমে ধুকপুকিয়ে টিকে থাকা। তাও এমন একটা পৃথিবীতে, যেখানে অবহেলা, অসম্মান একমাত্র সামাজিক অনুভূতি।
এমন একটি বিষয়ই উঠে এসেছে ‘অফসাইড’ ছবিতে।
গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র শীতল। সে ফুটবলার হতে চায়। কিন্তু তার চাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সমাজ। সমস্ত প্রতিকূলতাকে পেরিয়ে কীভাবে সে এগোয় তাই উঠে এসেছে ১৩ মিনিটের এই ছবিতে।
ছবিটি তৈরি করেছে খড়্গপুর আইআইটির একদল রিসার্চ স্কলার। কেউই ফিল্ম স্কুলের ধরাবাঁধা ক্লাস করেনি। তাদের সম্বল বলতে সিনেমার প্রতি নিখাদ ভালবাসা আর প্যাশন। সেই টানেই ছবি তৈরির ইচ্ছেডানা মেলে আকাশে।
সকলেরই প্রথম ছবি। কোনরকম আর্থিক সাহায্য ছাড়াই সম্পূর্ণভাবে নিজেরাই তৈরি করেছেন ছবিটি। আর সেই ছবিই জায়গা করে নিল ২৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে।
ছবির গল্প শাওন বাগ, সায়ন দাশগুপ্ত এবং অভীক ভঞ্জের। চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় শাওন বাগ। শীতলের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বি টেক চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ইমন বর্মন।
আগামী ১০ নভেম্বর শিশির মঞ্চে দেখানো হবে 'অফসাইড'।