পুশতুন পিতার লড়াই

আফগানিস্থানের শাহারান প্রদেশ। সেখান থেকে ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তিন মেয়েকে স্কুলে দিতে আসেন মিয়া খান।

প্রত্যেক দিন এটাই তাঁর রুটিন। ঝড়-বৃষ্টি-রোদ- তাতে  কোনওদিন অন্যথা হয় না এই রুটিনের।

মেয়েদের ডাক্তার বানানো মিয়ার স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে বাস্তব করে তুলতে এভাবেই লড়াই চালাচ্ছেন  এই পুশতুন পিতা।

লড়াই-ই বটে। কারণ দেশটার নাম আফগানিস্তান। বরখা আর পুরুষতন্ত্রের কঠিন ঘেরাটোপে বদ্ধ সেখানকার মেয়েদের জীবন। বন্দুকের নলেই শেষ হয়ে যায় পড়াশোনার স্বপ্ন। তেমন দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে স্বপ্ন দেখা সহজ নয়।

তবু ভয় পাননা মিয়া। পেশায় দিনমজুর। তিনি বলেন, ‘আমি লেখাপড়া জানিনা। কিন্তু আমার মেয়েদের শিক্ষা আমার কাছে খুব দামী’

সুইডিশ কমিটি ফর আফগানিস্তান নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই ঘটনা প্রকাশ করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

স্কুল পৌঁছে দিয়েই কাজ শেষ হয়ে যায় না । যতক্ষণ স্কুল চলে ততক্ষণ তিনি দাঁড়িয়ে থাকে স্কুলের গেটের বাইরে। চার ঘন্টা পর ছুটি হলে আবার মেয়েদের নিয়ে ঘরে ফেরেন।

মিয়া খানের তিন মেয়ে। আফগানিস্তানের নুরানিয়া স্কুলের ছাত্রী তারা। তিন কন্যার শিক্ষাই তাঁর কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তিনি যে অঞ্চলে থাকেন সেখানে কোনও মহিলা ডাক্তার নেই। তাই মেয়েদের ডাক্তার হিসেবেই গড়ে তুলতে চান। যারা মানুষকে দেখবে।  শিক্ষায় কোনও ফাঁক রাখতে চান না। ছেলে আর মেয়ের তফাৎ কোনওদিন ভাবনাতেই আসেনি তাঁর।

মিয়া খানের এক মেয়ে রোজি কাল সিক্সের ছাত্রী। সে জানিয়েছে, ‘আমি ভাগ্যবান যে আমি পড়াশোনা করার সুযোগ পাচ্ছি’।

মিয়া খান একা নন, তাঁর ছেলেরাও বোনেদের একই ভাবে স্কুল পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করে।

 

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...