গত বছরের ২৫ মে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার মিনিয়াপোলিস শহর। জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কালো চামড়ার মানুষকে হাঁটু দিয়ে ঘাড় চেপে ধরল এক পুলিশকর্তা। সাদা চামড়ার ওই অফিসারের নাম ডেরেক চাউভিন। কিছুক্ষণের ছটফটানি। তারপর দম বন্ধ হয়ে মৃত্যু।
তার অপরাধ যত না ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি অপরাধ ছিল সে কালো চামড়ার মানুষ হয়ে জন্মেছে।
সেই ভিডিয়ো দেখে শিউরে উঠেছিল গোটা বিশ্ব। প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গিয়েছিল আমেরিকায়।
বর্ণ বিদ্বেষের এই নগ্ন চেহারায় স্তম্ভিত হয়েছিল বিশ্ব!
গত বছর পুলিশের হাতে ফ্লয়েডকে নির্যাতনের ঘটনার ভিডিও মোবাইল বন্দি করে ১৭ বছর বয়সী কিশোরী ডারনেলা ফ্রেজিয়ার।
বর্ণ বিদ্বেষী এই ঘটনাকে প্রকাশ্যে এনেছিল এই কিশোরী।
২০২১ -এর অন্যতম পুলিৎজার প্রাপক। বিশেষ সম্মান পেয়েছে সে
এই ঘটনার সংবাদ সবার আগে প্রকাশ করায় দ্য মিনিয়াপোলিস স্টার ট্রিবিউনকে ব্রেকিং নিউজ ক্যাটাগরিতে পুলিৎজারে সম্মানিত।
২০২১-এর আরও দুই পুলিৎজার ঘোষণায় ভারতীয়দের খুশি হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। এবারের পুরস্কার প্রাপকদের মধ্যে আছে দুই ভারতীয় বংশোদ্ভূত। মেঘা রাজাগোপালন এবং নীল বেদী।
চিনে মুসলিমদের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রেখেছে চীনা সরকার। স্যাটেলাইট ইমেজকে হাতিয়ার করে সেই খবরের বিশদ সামনে আনার স্বীকৃতি পেয়েছেন মেঘা।
প্রতিবছর এমনই সব দুনিয়া কাঁপানো সংবাদ এবং সাংবাদিকদের স্বীকৃতি জানানো হয় পুলিৎজার সম্মানে।
সাংবাদিকতা, সাহিত্য এবং সঙ্গীতের সর্বোচ্চ সম্মান পুলিৎজার।
নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এই পুরস্কারের তত্ত্বাবধায়ক।
পুরস্কারের সূচনাকার জোসেফ পুলিৎজার। ‘মিডিয়া ম্যাগনেট’। ‘ইয়েলো জার্নালিজম’ বা হলুদ সাংবাদিকতা শব্দটা যাঁর নামের সঙ্গে লেগে রয়েছে আজও।
হাঙ্গেরীয়-মার্কিন সাংবাদিকই পুলিৎজার পুরস্কারের প্রচলন করেছিলেন।
১৯১১ সালে মৃত্যুর সময় পুলিৎজার কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে প্রচুর পরিমাণ অর্থ রেখে গিয়েছিলেন। তার অর্থের কিছু অংশ দিয়ে ১৯১২ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছিল সাংবাদিকতা বিভাগ।
১৯১৭ সালের ৪ঠা জুন প্রথম পুলিৎজার পুরস্কার প্রদান শুরু হয়।
বর্তমানে প্রতি বছরের এপ্রিল মাসে পুরস্কারটি ঘোষিত হয়। একটি স্বাধীন বোর্ড বিজয়ী নির্বাচন করে থাকেন। প্রতিবছর ২১টি ক্ষেত্রে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। পাবলিক সার্ভিস বিভাগে সেরাকে দেওয়া হয় স্বর্ণপদক।
পুলিৎজার পুরস্কারের মূল্য ১৫ হাজার মার্কিন ডলার।