বাঙালি তো বটেই, সারা বিশ্বে এই সুস্বাদু-লোভনীয় মাছটির প্রেমী কিন্তু কম নেই! ভাপে, মালাইকারি, দোপেঁয়াজা -এগুলির মতো দেশি পদের সঙ্গে বিভিন্ন বিদেশী কন্টিনেন্টাল পদের সঙ্গেও তার রসায়ন অতুলনীয়। বাগদা, গলদা, কুঁচো -নাম, প্রজাতি, আকার যতই ভিন্ন হোক না কেন, আমীষভোজীদের কাছে স্বাদের রাজা হিসেবে চিহ্নিত হয়- চিংড়ি। কিন্তু গহীন সমুদ্রে এমন কিছু চিংড়ির অস্তিত্ব রয়েছে যা 'বিরল' বলেই মনে করেন প্রানী বিশেষজ্ঞরা। এবার খোঁজ মিলল তেমনই এক বিরল 'ব্লু লবস্টার' অথবা নীল গলদা চিংড়ির।
আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসের এক রেস্তরাঁয় রান্নার জন্য কেনা হয়েছিল বাক্সভরতি চিংড়ি। বাক্স খুলতেই দেখা যায়, অনেকগুলো লবস্টারের ভিড়ে রয়েছে একটি ঘন নীল রঙের চিংড়ি। তা দেখে কিছুক্ষণের জন্য অবাক হয়ে যান রেস্তোরাঁর মালিক নিকারসেন। তিনি ভেবে উঠতে পারছিলেন না, চিংড়ির পেটিতে ওরকম একটা প্রাণী এল কীভাবে? তারপর রেস্তরাঁর সব কর্মীরা বুঝতে পারেন ওটি কোনও অদ্ভুতুড়ে প্রানী নয় বরং একটি লবস্টার। তারপর তাঁরা সেটিকে আলাদাভাবে রেখে দেন। পরে রেস্তরাঁয় যাওয়া ক্রেতাদের সেটি দেখান। সকলেই সেই ভিন্নরূপী চিংড়ি দেখে বিস্মিত হয়ে যান।
খবর পৌঁছায় প্রাণী বিশেষজ্ঞদের কাছে। তাঁরা নিকারসেনের 'আরনল্ড লবস্টার অ্যান্ড ক্লাম বার'-এ গিয়ে নীল লবস্টারটি পরীক্ষানিরীক্ষা করেন। তারপর জানা যায়, এটি অত্যন্ত বিরল প্রকৃতির এক সামুদ্রিক প্রাণী। জিনগত সমস্যার কারণে ২০ লক্ষ লবস্টারের মধ্যে মাত্র ১টির রং এমন নীল হয়।
রেস্তরাঁর মালিক নিকারসেন বিরল সেই চিংড়ির ছবি তুলে নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানান নিজেদের এহেন অভিজ্ঞতার কথা। ব্যাস! তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ার। অনেকেই সেই বিরল চিংড়ি দেখতে চেয়ে আগ্রহও প্রকাশ করেন। তাই নিকারসেন শেষপর্যন্ত জানিয়েছেন, ‘আমি এই লবস্টারটি সেন্ট লুইস অ্যাকোরিয়ামে দিতে চাই, বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী সংরক্ষণে যারা বেশ সুনামের সঙ্গে কাজ করে। আমি চাই মানুষ চাক্ষুস করুক এই বিরল সামুদ্রিক চিংড়িটিকে।’