কলকাতা দেশের অন্যতম প্রধান মেট্রো শহর।এই শহরের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বেড়ে চলেছে, সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। এমন বহু মানুষ আছেন যাঁরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কলকাতায় আসেন প্রয়োজনীয় কাজ সারতে। তাছাড়াও কিছু যাত্রী নিজেদের যাত্রাকালীন অবসরে একটু আরামে থাকতে চান। কর্মব্যস্ত জীবনে আমরা সবাই একটু আরাম পেলে তা চট করে নিয়ে নিই। কারণ ছুটন্ত এই জীবনে শরীর একটু আরাম পেলে মনেরও প্রশান্তি হয়, যা একান্তভাবেই কাম্য আজকের এই দুনিয়ায়। তাঁদের কথা ভেবেই কলকাতা তথা পূর্ব ভারতের অন্যতম রেলওয়ে স্টেশনে অত্যাধুনিক একজিকিউটিভ লাউঞ্জের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। গতকাল বাংলা নববর্ষের দিন তার উদ্বোধন হয়ে গেল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিয়ালদহ বিভাগের ডিআরএম প্রভাস দানসানা, আইআরসিটিসি ইস্ট জোনের গ্রূপ জেনারেল ম্যানেজার দেবাশিস চন্দ্র সহ অন্যান্যরা। একজিকিউটিভ লাউঞ্জটির উদ্বোধন করেন ওই শাখার দু'জন মহিলা টিকিট পরীক্ষক। শিয়ালদহ স্টেশনের চারটি রিটায়ারিং রুম ও দুটি ডরমিটরিরও সংস্কার সাধন করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। প্রথম দফায় দুটি রিটায়ারিং রুম কিছুদিনের মধ্যেই চালু হয়ে যাবে। স্টেশন বিল্ডিংয়ের দোতলায় এই লাউঞ্জটি তৈরী হয়েছে। আইআরসিটিসি সূত্রের খবর, এই লাউঞ্জে যাত্রীরা ঘন্টা প্রতি ভাড়া দিয়ে মনোরম পরিবেশে বিশ্রাম নেওয়া থেকে শুরু করে স্নান খাওয়াও করতে পারবেন। ওই লাউঞ্জে থাকছে বড় এলইডি টিভি, ওয়াইফাই, দৈনিক সংবাদপত্র এবং ম্যাগাজিন। একসঙ্গে ৫০ জন যাত্রী এই লাউঞ্জে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পাবেন। প্রথম দু'ঘন্টার জন্য ভাড়া ধার্য করা হয়েছে ১০০ টাকা। পরবর্তী প্রত্যেক ঘন্টার জন্য ৫০ টাকা করে ভাড়া দিতে হবে। বিভিন্ন ধরনের চা, কফি এবং পানীয় জল যাত্রীরা পাবেন বিনামূল্যে। থাকবে ইন হাউস ক্যাটারিং পরিষেবাও। পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা সূত্রের খবর, কোনও যাত্রী বিশ্রামের পাশাপাশি ন্যূনতম ৫০০ টাকার খাওয়াদাওয়া করলে প্রথম দু'ঘন্টার ভাড়া ছাড় পাবেন। এখানে ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ এবং ডিনারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আপাতত স্পট বুকিং-এর ব্যবস্থা থাকলেও আগামীদিনে অনলাইনের মাধ্যমেও যাত্রীরা লাউঞ্জের বুকিং করতে পারবেন বলে সূত্রের খবর।
আইআরসিটিসি'র গ্রূপ জেনারেল ম্যানেজার (ইস্ট জোন) দেবাশীস চন্দ্র এ বিষয়ে জানান, রাজ্যে প্রথম এই ধরনের লাউঞ্জ চালু হল শিয়ালদহ স্টেশনে। অত্যাধুনিক সুবিধাযুক্ত এই একজিকিউটিভ লাউঞ্জ হওয়াতে বহু যাত্রীর সুবিধা হবে। কিছু বড় স্টেশনে এই ধরনের লাউঞ্জ ইতিমধ্যেই চলি রয়েছে এবং যাত্রীরা তার সুবিধাও পাচ্ছেন। একদিনের কাজে যাঁরা কলকাতায় আসেন তাঁদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় এবং কার্যকরী হয়ে উঠবে এই লাউঞ্জ বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। আগামী দিনে এনজেপি এবং হাওড়া স্টেশনেও এমন লাউঞ্জ চালু করা হবে বলে রেল সূত্রে খবর। এই ধরণের লাউঞ্জ হওয়ার ফলে আমাদের শিয়ালদহ স্টেশনের গুরুত্ব আরো বেড়ে গেল তা বলাই বাহুল্য।