রান্নায় স্বাদ আনতে নুনের উপস্থিতি অপরিহার্য। রান্নায় কোনো কারণে নুন কম হয়ে গেলে সেই খাবারে বাইরে থেকে নুন না মেশানো পর্যন্ত গলাধঃকরণ করাও দায় হয়ে ওঠে। আবার কোনো খাবারে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি নুন হয়ে গেলেও সেই খাবার হয়ে ওঠে অখাদ্য। অতিরিক্ত নুন যে শুধু খাবারের স্বাদ নষ্ট করে তা কিন্তু নয় মানব শরীরেও এক ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে। তাই একটা মানুষের ঠিক কতটা পরিমান নুন খাওয়া উচিত তা জেনে নিন।
সাধারণত নুন শরীরের জন্য উপকারী কারণ এতে থাকে সোডিয়াম যা শরীরে রক্তের পরিমান নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে অতিরিক্ত তৃষ্ণা, শরীরে তরলের ব্যালেন্স রাখা, সেলুলার অসমোটিক প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং নার্ভের ইমপালসকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ট্রান্সমিট করার পিছনে সোডিয়ামের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। কিন্তু পরিমানের থেকে বেশি পরিমানে নুন যদি শরীরে প্রবেশ করে তাহলে হতে পারে নানা সমস্যা। ৫০ বছরের অধিক বয়স যাদের এবং যাদের ব্লাড প্রেসারের সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রেই বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এই নুন। অতিরিক্ত নুন খেলে তার মধ্যে উপস্থিত সোডিয়াম বেশি পরিমানে রক্তে মেশে, ফলে হাই ব্লাড প্রেসার, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। সম্প্রতি এক জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত পরিমান কাঁচা নুন, সোডিয়াম রিচ ফুড বা অতিরিক্ত পরিমান লবণযুক্ত খাবার খেলে পাকস্থলীর ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অন্যের তুলনায় বহুগুণ বেড়ে যায়। অতিরিক্ত সোডিয়াম হাড়ের ঘনত্ব কমিয়ে অস্টিওপোরোসিসের সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দেয়। গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত সোডিয়াম শরীরে জল ধরে রাখতে সাহায্য করে ফলে ইডিমার মতো সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। এছাড়াও স্বল্পমেয়াদি যেসব অসুস্থতা চাড়া দিয়ে ওঠে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো তীব্র মাথাব্যথা, বমিভাব, পেশি শক্ত হয়ে যাওয়া প্রভৃতি। বয়স্ক ব্যক্তি ও অন্তস্বত্তা মহিলাদের উপর ক্ষতিকর প্রভাবগুলি বেশি কাজ করে। ডাক্তারদের দাবি, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ১৫০০ মিলিগ্রামের থেকে বেশি পরিমান লবন গ্রহণ করা উচিত নয়।
সুতরাং আপনারা জানলেন অতিরিক্ত লবন শরীরের কি কি ক্ষতি করতে পারে। তাই খাবারে স্বল্প নুন খান ও ভাতের সাথে কাঁচা নুন খাওয়া একদম বন্ধ করুন।