জয়পুরের ঝিখিরা থেকে রায়গঞ্জের দেবীতলা, বাংলার ব্যতিক্রমী রথযাত্রা

বর্ষার সবচেয়ে বড় উৎসব রথযাত্রা, আর এই উৎসবের মধ্যে দিয়েই শুরু হয় বাঙালির শ্রেষ্ঠতম উৎসব দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি। রথ বলতেই মনে ভেসে ওঠে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তির কথা। কিন্তু এই বাংলায় এমন অনেক রথযাত্রা বের হয় যেখানে তিন ভাইবোন রথে চড়েন না। আক্ষরিক অর্থে তারা বাংলার ব্যতিক্রমী রথযাত্রা।

এমনই এক বিচিত্র রথ দেখা যায় হাওড়া জয়পুরের ঝিখিরা গ্রামের মল্লিক বাড়িতে। মল্লিক বাড়ির রথযাত্রার বয়স ১২৮ বছর। ১৮৯৬ সাল নাগাদ হরিনারায়ন মল্লিক রথযাত্রার সূচনা করেছিলেন। মল্লিক বাড়ির রথে চাপেন না জগন্নাথ, মল্লিক বাড়ির ইষ্ট দেবতা দামোদরকে রথে বসিয়ে সফর করানো হয়। কাঠ নির্মিত রথটির উচ্চতায় প্রায় ৪০ ফুট। ঝিখিরার মল্লিক বাড়ির রথ আজ আর পরিবারিক উৎসবে আটকে নেই! এখন রথযাত্রা সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে।

Bengal Rath Yatra 2024

আরও এক ব্যতিক্রমীর রথযাত্রার সাক্ষী থাকে উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জ। রায়গঞ্জের দেবীতলার রথে জগন্নাথ, বলরাম বা সুভদ্রা নন, রাধাগোবিন্দ চড়েন। এই রথযাত্রার সূচনা হয়েছিল পূর্ববঙ্গ, তাও স্বাধীনতার আগে। পাবনা জেলার সিরাজগঞ্জের রাজাপুরে রথযাত্রার দিনে গ্রামবাসীরা রাধাগোবিন্দ বিগ্রহকে রথে চাপিয়ে উৎসব পালন করতেন। দেশভাগের পর রাধাগোবিন্দ চলে আসেন এপার বাংলায়। দেবীতলায় স্থাপন করা হয় বিগ্রহ। ওপার বাংলার রীতি মেনেই আজও রথযাত্রা পালন হয় দেবীতলায়। রথে অধিষ্ঠান করেন রাধাগোবিন্দ।

পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল রাজবাড়িতে ১৭৭৬ সাল থেকে রথযাত্রা উৎসব পালিত হচ্ছে। চারতলার কাঠের রথে জগন্নাথ থাকলেও, থাকেন না সুভদ্রা ও বলরাম। গোপাল জীউ ও রাজ রাজেশ্বরী থাকেন জগন্নাথের সঙ্গে। রাজবাড়ির গৃহদেবতা মদনগোপাল জীউর শালগ্রাম শীলা শ্রীধরও রথে চড়েন।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...