কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য সেরা শিরোপা পালক বংলার মুকুটে আগেই যুক্ত হয়েছে। তবে এবার মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্প রাষ্ট্রসঙ্ঘের ‘চ্যাম্পিয়ন প্রজেক্ট’-এর শিরোপা লাভ করলো। ফের একবার বিশ্ব দরবারে সমাদৃত হল বাংলা। ‘ক্যাপাসিটি বিল্ডিং’ বা ‘দক্ষতা বৃদ্ধি’ বিভাগে গোটা বিশ্বের ১৪৩টি প্রকল্পের মধ্যে সেরা পাঁচে ঠাঁই পেয়ে ফাইনাল পর্বে উঠেছে ‘উৎকর্ষ বাংলা’। রাষ্ট্রসঙ্ঘের ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনিভাতে আগামী ৯ এপ্রিল সেরা প্রকল্পটিকে পুরস্কৃত করা হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে 'উৎকর্ষ বাংলা' প্রকল্পটি এখন সেরার সেরা হয় কি না, সেটার জন্যই অধীর আগ্রহে আছে মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্যের গোটা প্রশাসনিক মহল। ওয়াকিবহাল মহলের সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলার মুকুটে নতুন পালক যুক্ত হওয়ায় ঘনিষ্ঠ মহলে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাছাড়া নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বের অন্যতম সম্মানজনক এই শিরোপা প্রদান অনুষ্ঠান আগামী ৮ ও ৯ এপ্রিল জেনিভায় অনুষ্ঠিত হবে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যে হল, রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মোপযোগী ও স্বল্পমেয়াদি দক্ষতা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। প্রকল্পটি চালু করা হয় ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সালে এবং বিশেষ প্রকল্পটিকে তদারকি করার জন্য তৈরি করা হয় পশ্চিমবঙ্গ সোসাইটি ফর স্কিল ডেভেলপমেন্ট নামে একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এই বিষয়ে পিবিএসএসডি’র এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, সমগ্র বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নিজের পরিকল্পিত এবং বাস্তবায়নও তাঁরই নির্দেশিত পথ ধরেই হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেকার যুবক-যুবতীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ভোকেশনাল এবং কারিগরী প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মোপযোগী করা হয়। উক্ত বিষয়ে আরো জানা যায়, ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পের সঙ্গে গোটা দেশের পাঁচশোটিরও বেশি বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়েছে রাজ্য সরকারের সহযোগী হিসেবে। ২০১৮ সালে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৭৫০০ যুবক-যুবতী ভোকেশনাল এবং কারিগরী প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকরিও পেয়েছেন বলে জানা যায়। রাজ্যজুড়ে ক্রমেই ভরসার কেন্দ্র হয়ে উঠছে এই প্রকল্প। নবান্ন সূত্রে জানা যায়, মানুষের কল্যাণই একমাত্র অভিমুখ, এহেন নানা প্রকল্পকে নিয়ে ২০০৩ সাল থেকে প্রতিযোগিতামূলক পুরস্কার ডব্লুএসআইএস চালু করে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সংস্থা আইটিইউ। এ বছর মোট ১৮টি ক্যাটিগরিতে নানা পুরস্কারের জন্য গোটা বিশ্ব থেকে মনোনয়ন চাওয়া হয় আইটিইউ’এর তরফে। রাজ্য তার উৎকর্ষ প্রকল্প নিয়ে অংশ নিয়েছিল ‘ক্যাপাসিটি বিল্ডিং’ ক্যাটিগরিতে। তাছাড়া উক্ত বিষয়ে আরো জানা যায়, গোটা বিশ্ব থেকে ১০৬২টি মনোনয়ন জমা পড়ে। অনলাইনে ভোট পড়ে ২০ লক্ষেরও বেশি। ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের যে ক্যাটিগরিতে ‘উৎকর্ষ বাংলা’ অংশ নিয়েছিল, তাতে তামাম দুনিয়া থেকে জমা পড়েছিল ১৪৩টি প্রকল্প। এর মধ্যে থেকে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া পাঁচটি সেরা প্রকল্পকে ডব্লুএসআইএস পুরস্কারের জন্য ‘চ্যাম্পিয়ন প্রজেক্ট’ বাছাই করা হয়েছে। আর তাতেই ঠাঁই পেয়েছে ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পটি।