ভারতবর্ষের মতো দেশে সন্তানের পড়াশোনা থেকে শুরু করে সবকিছুর দায়িত্বই থাকে তার পিতামাতার উপরেই। সন্তানের জন্য টাকার উপর টাকা খরচ করে যেতেও পিছপা হননা তাদের বাবামায়েরা। এতকিছু করার পরেও তাদের জায়গা অনেকক্ষেত্রেই হয় বৃদ্ধাশ্রমে। এই দুঃখজনক পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য অনেকদিন ধরেই দেশে প্রণয়ন করা হচ্ছে কিছু আইনের।সন্তানেরা যাতে বাবামায়ের সম্পূর্ণ যত্ন নিতে পারে তার দায়িত্ব এবার থেকে সন্তানদেরই নিতে হবে।কিন্তু সন্তান যদি সন্ন্যাসী হতে চায় তাহলে? তাহলে কি সে পারবে বাবামায়ের প্রতি তার সমস্ত দায়িত্ব অস্বীকার করে যেতে? কি বলছে আইন?
এবার আসা যাক আসল গল্পে।এই ঘটনাটি শুরু হয় যখন ধর্মেশ গোল নামক এক তরুণ সন্ন্যাসী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।জানা গেছে, ২৭ বছর বয়সী ধর্মেশ ফার্মাসিউটিক্যালসে মাস্টার ডিগ্রি কমপ্লিট করার পরেই সে একের পর এক কাজের অফার রিজেক্ট করতে থাকে। বাবা মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে সে একটি এনজিওর জন্য কাজ করতে শুরু করতে।৬০,০০০ টাকার চাকরি ছেড়ে শেষপর্যন্ত সে এনজিওর সাথে কাজ করাকেই বেশি পছন্দ করে থাকে।
তার বাবামা তাকে অনেকদিন ধরে খোঁজার চেষ্টা করেও যখন তাকে খুঁজে না পেয়ে অবশেষে পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশের সাহায্যে তাকে খুঁজে বের করা হলেও সে তার বাবামায়ের সাথে ফিরে যেতে অস্বীকার করে থাকে।ধর্মেশের বাবা মা জানান, তার উচ্চ শিক্ষার জন্য তাদের জমানো সমস্ত টাকাই তারা শেষ করে ফেলেন।প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা তারা খরচ করেন ধর্মেশের পিছনে। তারা জানান, তাদের এটাই আশা ছিল শেষ বয়সে তাদের সন্তান অনেক বেশি টাকা উপার্জন করে তাদের দেখভাল করবে। জানা গেছে, ধর্মেশের মাসিক ইনকাম খুব কম নয়। সে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেকচার দিয়ে এবং বিভিন্ন ফান্ডরাইজিং প্রোগ্রাম করে প্রায় ১ লক্ষ টাকা মাসে ইনকাম করে। কিন্তু তার মধ্যে তার বাবা মায়ের জন্য কোনো টাকা খরচ করার কথা সে ভাবেও না। অবশেষে কোর্টের শরণাপন্ন হতে হয় তার বাবা মা কে। তারা পুলিশের কাছে সাহায্য চাওয়ার ফলে কোর্ট থেকে ধর্মেশকে নির্দেশ দেওয়া হয় ধর্মেশ যদি খুব কম করেও ৩৫ হাজার টাকা আয় করে থাকে তাহলে তার মধ্যে থেকেও ১০ হাজার টাকা বাবামায়ের দেখভালের জন্য তাকে দিতে হবে।এর পরেই কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সমস্ত সন্তানকেই আয় করতে হবে এবং বয়সকালে তার বাবামায়ের দেখভাল করতেই হবে।