বর্জ্য সবজি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন

সরকারি উদ্যোগে বেলাকোবা কৃষক বাজারের জমিতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের ইউনিট গড়ে সেখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিল জলপাইগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটি। যদিও জেলার তিনটি পুরসভা সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প রূপায়নের ক্ষেত্রে জমি সমস্যায় জর্জরিত হয়ে থাকার জন্য পুর এলাকার জৈব ও অজৈব অৰ্জন থেকে জৈব জ্বালানি তৈরী করতে পারছেনা। সেখানে এই ধরনের ইউনিট যথেষ্ট গুরুত্ব রাখে তা বলাই বাহুল্য।

                     জেলার নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির অধীনে বেলাকোবা, ময়নাগুড়ি, ধুপগুড়িতে আলাদা আলাদা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি রয়েছে, যাদের মাধ্যমে পরিচালিত হয় সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষক বাজার। এই সমস্ত কৃষক বাজারগুলি মূলত কৃষি অধ্যুষিত বলয়ে অবস্থিত। তাই এখানে কৃষকেরা সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে বিভিন্ন প্রকার সবজি নিয়ে আসেন। হাট শেষ হয়ে গেলে প্রচুর সবজি পড়ে থাকে এই বাজারে। সবজির খোসা, নষ্ট সবজি, ডাঁটা, পাতা প্রভৃতি পড়ে থাকা সব্জিগুলি অনেকেই বিনামূল্যে নিজেদের গবাদি পশুর জন্য নিয়ে যান। বাছাই করা কিছু সবজি কৃষকেরা নিয়ে গেলেও বাজারে পড়ে থাকে আরও প্রায় ১০০-১২০ কেজির মত সবজির বর্জ্য। সপ্তাহে সপ্তাহে সেই সব সবজি পচে যায় এবং তার থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে জায়গাটি দূষিত করে তোলে। কারণ সেগুলি ফেলার অন্য কোনও জায়গাও নেই। স্থানীয় পুরসভা কিংবা পঞ্চায়েতের সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প নেই, যেখানে এগুলি পাঠিয়ে উন্নয়নমূলক কিছু করা যাবে।

                      এবারে জলপাইগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি তাদের নিজেদের খরচে বেলাকোবা কৃষক বাজারে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ইউনিট তৈরি করেছে। অতিরিক্ত বর্জ্য সবজি এই ইউনিটের মাধ্যমে জৈব জ্বালানি তৈরী করা হবে। ১০০ কেজি সবজির বর্জ্য দিয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে, তা দিয়ে ৬ ঘন্টা কৃষক বাজারের বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়া সম্ভব বলে জানান, জলপাইগুড়ি জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সচিব দেবাঞ্জন পালিত। ইউনিটটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৭ লক্ষ টাকা। কিছুটা যান্ত্রিক কাজ বাকি আছে, যার জন্য ২/৩ লক্ষ টাকা আরও খরচ হবে। ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির প্রথম দিকেই বেলাকোবার ইউনিটটি চালু হয়ে যাবে বলে আশা করছেন নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সদস্যরা। এই প্রকল্পকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ তৈরির পর সেই প্ল্যান্ট থেকে জৈব সার পাওয়া যাবে। এখানে সাফল্য পেলে পরে ময়নাগুড়ি, ধুপগুড়িতেও একইরকম ইউনিট বসানোর পরিকল্পনা করা হবে বলে ভাবা হচ্ছে।

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...