“ মৃত্যুর পর না হয় গাছ হব”

মৃত্যুর পরেও ফুরবে না জীবন। প্রিয়জন বেঁচে থাকবে গাছ হয়ে। আলো দেবে। ছায়া দেবে। ফলে, ফুলে ভরে থাকবে শাখা-প্রশাখা।

নাহ। এ কবিতার কথা নয়। এই উপমা এখন বাস্তবে সত্যি হতে চলেছে।

মৃত্যুর পর অন্তিম সংস্কারের দীর্ঘ প্রক্রিয়া অনেকেই মেনে নিতে পারেন না। শুধু যুক্তি- তক্কের বিচারে নয়, প্রিয় জনকে শেষ বিদায় দেওয়ার শোকাবহ পরিবেশে এই সব আচার- অনুষ্ঠান বাড়তি মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। তাই যত দিন যাচ্ছে অন্য সব কিছুর মতোই বিবর্তন ঘটছে পরলৌকিক ক্রিয়ার পদ্ধতিতেও।

মৃতের অন্তিম সংস্কারের ক্ষেত্রে এক অভিনব পদ্ধতিতে আবিষ্কার করলেন বিজ্ঞানীরা। এই পদ্ধতি বদলে দিতে পারে এতদিন ধরে চলে আসা কফিন ব্যবস্থাও।

ইতালির সংস্থা ক্যাপসুলা মুন্ডি  ইকো- ফ্রেন্ডলি ‘কফিন’ আবিষ্কার করেছেন। হঠাৎ দেখলে মনে হতে পারে কোনও বড় পাখির ডিম। কাদামাটি রঙের ডিম্বাকৃতি বস্তুটি বিজ্ঞানীদের পরিভাষায় আসলে একটি ‘পড’ মানে বীজ।

মৃত ব্যক্তির দেহকে তার মধ্যে প্রতিস্থাপিত করতে হবে। মাতৃ জঠরে শিশু যে ভঙ্গিতে বেড়ে ওঠে একেবারে সেভাবেই। তারপর ‘পড’টি মাটির গভীরে স্থাপন করা হবে। মাটির উর্বরতা অনুযায়ী ৬ মাস বা ১ বছরের মধ্যে উদ্ভিদ চারা জন্ম নেবে তা থেকে। প্রিয় মানুষ বেঁচে থাকবে গাছ হয়ে।

কাঠের কফিন তৈরির জন্য বহু গাছ কাটা পড়ে। বনভূমি ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিজ্ঞানীদের এই নতুন আবিষ্কার সম্পূর্ণ ভাবে পরিবেশ বান্ধব বলে দাবী করেছেন তাঁরা। সঙ্গে জানিয়েছেন, ‘ইকো- ফ্রেন্ডলি পড’ কোনও নির্দিষ্ট জাতি, ধর্ম বা গোষ্ঠীর জন্য নয়, বিশ্বের যে কোন প্রান্তের যে কোনও মানুষই নিজেদের ইচ্ছা অনুসারে ‘পড’ ব্যবহার করতে পারেন।

২০১৯-এর মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে গবেষণার কাজ। এখন তাঁরা ইতালি সরকারের চূড়ান্ত অনুমতির অপেক্ষায় দিন গুনছেন।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...