বিশ্বের তাবড় তাবড় বিজ্ঞানীদের পিছনে ফেলে এগিয়ে গেলো মাত্র ১০ বছর বয়সী একজন শিশু। খেলার ছলে যে সে আবিষ্কার করে ফেলেছে ডাইনোসরের ডিম! বাঁধের ধারে খেলতে গিয়ে আচমকাই সে খুঁজে পায় ডাইনোসরের ডিমটি। স্বাভাবিকভাবেই এই খোঁজ চমকে দিয়েছে বিজ্ঞানীমহলকে। চীনের হেয়ুয়ান অঞ্চলে সম্প্রতি ঘটেছে এই ঘটনাটি। কিভাবে ঘটলো এই ঘটনাটি? এতো যুগ পরে কোথা থেকে এলো প্রাগৈতিহাসিক যুগে হারিয়ে যাওয়া প্রাণীর ডিম?
জানা গেছে, ঝ্যাং নামক ১০ বছর বয়সী একজন শিশু স্কুল থেকে ফিরে তার স্বাভাবিক রুটিন মতো নদীর ধারে খেলতে গিয়েছিলো। বাঁধের ধারে খেলতে গিয়ে তার মনে পড়ে পকেটে রাখা আখরোটের কথা। আখরোট ভাঙার জন্য সে খোঁজ শুরু করে শক্ত পাথরের। পাথরের খোঁজ মেলে অবশেষে। কিন্তু পাথরের আঘাতে শিশুটি যেই আখরোট ভাঙতে যাবে অমনি সন্দেহ হয় তার। দেখে পাথরের উপরে অদ্ভুত সাদা কালো ছোপ রয়েছে। বিজ্ঞানের উপর ঝোঁক থাকায় তার চিনতে অসুবিধা হয় না যে এটি কোনো সাধারণ পাথর নয় বরং এটি কোনো প্রাণীর ডিম। চমকে ওঠে ঝ্যাং। বিজ্ঞানের বইতে পড়া ছবির সাথে যে বেজায় মিল রয়েছে এটির। তাহলে কি এটা ডাইনোসরের ডিমের ফসিল?
আখরোট ফেলে সেই পাথর হাতে নিয়ে বাড়ির দিকে দৌড়ায় ছোট্ট ঝ্যাং। মায়ের কাছে গিয়ে সমস্ত ঘটনা খুলে বললেও প্রথমে বিষয়টিকে বিশেষ আমল দেননি তার মা। ছেলে খুব জোর করলে শেষমেশ পুলিশের কাছে যায় তার মা। সবকিছু শুনে পুলিশ আসে এবং তাদের সাথে আসে সেখানকার জাদুঘরের একজন বিশেষজ্ঞ। পাথরটি যাচাই করেই নিশ্চিত হন সেই বিশেষজ্ঞ। সঙ্গে সঙ্গে বাঁধের কাছে সেই জায়গাটিতে পৌঁছায় গবেষকদের একটি দল। সেই জায়গায় খননকার্য চালিয়ে সেখান থেকে উদ্ধার হয় আরও ১০টি ডিম।
ঝ্যাংয়ের মা জানান, ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞানের প্রতি বিশেষ আগ্রহ রয়েছে ঝ্যাংয়ের। এছাড়াও বিজ্ঞানসংক্রান্ত নানা ম্যাগাজিনও পড়ে সে। তাই ডাইনোসরের ডিম চিনতে অসুবিধা হয়নি তার। গবেষকরা জানাচ্ছেন, এর আগেও চীনের এই অঞ্চলটি থেকে ডাইনোসরের ডিম উদ্ধার করা হয়েছিল। ২০১৫ সালে এই অঞ্চলে যখন রাস্তা তৈরী কাজ চলছিল তখন এই অঞ্চল থেকে ৪৩ টি ডাইনোসরের ডিমের ফসিল উদ্ধার করা হয়।১৯৯৬ সালে সর্বপ্রথম এই অঞ্চলে ডাইনোসরের ডিমের হদিস মেলে। তার পর থেকে মোট ১৭,০০০ এর বেশি ফসিল এই জায়গা থেকে পাওয়া যায়। এইকারণে এই অঞ্চলটি অর্থাৎ চীনের হেয়ুয়ান অঞ্চল 'হোম অফ ডাইনোসর' হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।