আর্থ্রাইটিসের ব্যথায় কষ্ট পান না এরকম মানুষ খুব কমই আছেন। বয়স ৫০ এর কোঠা পেরোলেই শুরু হয় হাঁটুর ব্যথা। সমীক্ষায় দেখা গেছে, সারা বিশ্বের প্রায় ২৩.৭ মিলিয়ন মানুষ আজকের দিনে দাঁড়িয়ে হাঁটুর ব্যথার বা আর্থ্রাইটিসের শিকার। আর্থ্রাইটিস বা বাত কমানোর কোনো প্রপার মেডিসিন আজ পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাতের চিকিৎসার মধ্যে প্রথমেই থাকে ব্যথা কমানোর ওষুধের ব্যবহার। আর্থ্রাইটিসের ফলে শরীরের বিভিন্ন জয়েন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। আর্থ্রাইটিস অনেক প্রকারের হয় যেমন, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস। এটি একধরণের অটো ইমিউনো ডিজিজ। এই রোগটির ক্ষেত্রেও জয়েন্টে ইনফ্লেমেশন হতে থাকে। এই রোগ থেকে মুক্তির উপায় বহুদিন ধরেই গবেষকরা খুঁজছেন।নানা গবেষণা, নানা তথ্য এবং নানা মেডিসিন দিয়ে এই রোগ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও সম্পূর্ণ নির্মূল করা যায়নি।
সম্প্রতি গবেষণায় উঠে আসা একটি নতুন তথ্য আশার আলো দেখিয়েছে চিকিৎসক মহলে। জানা গেছে, আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় মৌমাছির বিষ খুব ভালো কাজ দিচ্ছে। বিজ্ঞানীদের মতে, আর্থ্রাইটিসের সমস্যায় অনেকটা সাহায্য করতে পারে মৌমাছির বিষ। দেখা গেছে, আর্থ্রাইটিসের সমস্যা অনেকাংশে কমাতে পারছে মৌমাছির বিষ। তবে এই ওষুধ আর্থ্রাইটিস সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করতে পারবে কিনা তা নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। 'ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিস স্কুল অফ মেডিসিন'-এর গবেষকদের মতে, মৌমাছির বিষ থেকে তৈরী ইনজেকশন আর্থ্রাইটিস সারাতে সক্ষম। মার্কিন গবেষকদের দাবি, ইঁদুরের উপর পরীক্ষা চালিয়ে ইতিমধ্যেই তারা সফল হয়েছেন। তাই ভবিষ্যতে এই ওষুধ মানবকল্যাণে কাজে লাগবে বলেই মনে করছেন তারা।
সম্প্রতি, এই গবেষণা প্রকাশিত হয় বিজ্ঞানসম্পর্কিত একটি গবেষণাপত্রে। সেখানে জানানো হয়, মৌমাছির বিষে উপস্থিত মেলিটটিন নামক একধরণের পেপটাইড দিয়ে তারা একধরণের 'ন্যানো পার্টিকল' সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়েছেন যা প্রাকৃতিক পেন কিলার হিসেবে কাজ করে। তবে মৌমাছি হুল ফোটালে এই মেলিটটিনের কারণেই কিন্তু তীব্র যন্ত্রনা অনুভূত হয়ে থাকে। গবেষকদের দাবি, এই মেলিটটিনের সাহায্যে শরীরের বিভিন্ন তরুনাস্থি বা কার্টিলেজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব। চিকিৎসকেরাও সহমত পোষণ করছেন গবেষকদের সাথে। তারাও জানিয়েছেন, বড় দুর্ঘটনার পর যদি রোগীর শরীরে মেলিটটিন প্রয়োগ করা যায় সেই ক্ষেত্রে বড় ক্ষতির আশঙ্কা অনেকক্ষেত্রে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভবপর হবে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে আশার আলো দেখানো এই মেলিটটিন ভবিষ্যতে আর্থ্রাইটিসের প্রকোপ দূর করতে পারবে এমনটাই আশা গবেষকদের।