গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমেও খাদ্যরসিক বাঙালির মনকে সান্ত্বনা দিতে পারে একমাত্র যে জিনিসটি তা হলো ফলের রাজা আম। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের মানুষ সারাবছর ধরে অপেক্ষা করে থাকে এই সময়টির জন্য যখন আমবাগানের গাছগুলির প্রতি শাখায় ঝুলবে গাছপাকা ল্যাংড়া, হিমসাগর কিংবা ফজলি। বাংলার মতো আজকাল আমের চাহিদা রয়েছে বিদেশেও। ইতিমধ্যে রপ্তানিও শুরু হয়ে গেছে। আম খেতে ভালোবাসে না এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া কিন্তু বেশ কঠিন। কিন্তু ভালোবাসার টানে অতিরিক্ত আম খেয়ে ফেললে কি কি বিপত্তি হতে পারে, শরীরে কি কি রোগ থাবা বসাতে পারে তা জানা আছে তো?
পাকা আমের সাথে সাথে আজকাল চাহিদা বেড়েছে কাঁচা আমেরও। সে পাকা হোক বা কাঁচা, অতিরিক্ত কোনো কিছুই সবসময় বিপরীত ফল প্রদান করে থাকে। তাই অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে কি কি সমস্যা হতে পারে চলুন আজ জানা যাক...
১) আমে শর্করার পরিমান অধিক থাকার কারণে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেরকমই ডায়াবেটিক পেশেন্টরা যদি অতিরিক্ত আমি খেয়ে নেন তাহলে তাদের রক্তে চিনির পরিমান কিন্তু আরও বাড়তে পারে। তার ওপর রক্তে যদি ইতিমধ্যেই শর্করার বাড়বাড়ন্ত ভাব থাকে তাহলে অতিরিক্ত আম এড়িয়ে চোলাই ভালো।
২) আমের মধ্যে গ্লুকোজের থেকে বেশি পরিমানে ফ্রুকটোজ থাকে। আর এই সমতার অভাবের জন্য ফ্রুকটোজ শরীরে ঠিকমতো শোষিত হতে পারে না। এর ফলস্বরূপ বদহজম হতে পারে। তাই যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে আম শরীর খারাপের কারণ হতে পারে।
৩) আম খাওয়ার ফলে আর্থ্রাইটিস বা বাতের সমস্যা বহুগুন বেড়ে যেতে পারে। তাই হাঁটু ব্যাথা যদি অনুভব করেন তাহলে পাত থেকে আম বাদ দিতেই হবে।
৪) আমে থাকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি এবং প্রচুর ক্যালোরি তাই যাদের শরীরে মেদ জমার প্রবণতা আছে তাদের আম এড়িয়ে চলাই ভালো।
৫) আম খাওয়ার সময় খেয়াল রাখা উচিত আমের খোসার সাথে যে কষ বা আঠা লেগে থাকে সেটি যেন কোনোভাবে মুখে না লাগে। সেই আঠা মুখে লাগার ফলে মুখের ঘা থেকে শুরু করে চুলকানি, জ্বালা করার মতো সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
৬) অনেকের ক্ষেত্রে আম খেলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা যায়। সবক্ষেত্রে হজমের সমস্যা তা কিন্তু নয়। কিছু ক্ষেত্রে গায়ে ফুসকুড়ি বেরোনো তার সাথে চুলকানি ও জ্বালার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। সেই ক্ষেত্রে ধরা হয় যেই ব্যক্তির আমে অ্যাল্যার্জি রয়েছে, তাদের আম না খাওয়াই ভালো।
আমের মরশুম অথচ আম খাওয়া হবে না তা কি হয়? আম প্রিয় বাঙালির কাছে আম না খাওয়ার অর্থ পুরো গরমকালটাই মাটি। তাই নেহাত ডায়াবেটিস বা অ্যাল্যার্জি এইসব সমস্যা না থাকলে নির্বিঘ্নে আম খান কিন্তু খেয়াল রাখবেন অতিরিক্ত যেকোনো কিছুই বিপরীত ফল প্রদান করে থাকে। তাই আম খান কিন্তু পরিমানে কম খান তাহলেই কোন সমস্যা শরীরকে ব্যস্ত করে তুলতে পারবে না।