সম্প্রতি পূর্ব রেলওয়ে সংস্থা তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর নতুন রেললাইন প্রকল্পটি সম্পূর্ণ করার জন্য পুরোদমে কাজে লেগেছে। এই উদ্যোগটি অঞ্চলে সংযোগ এবং পর্যটন সম্ভাবনাকে বাড়ানোর জন্যই নেওয়া হয়েছে। রূপান্তর হয়ে যাবে সেই রেল রুট।
জানা গিয়েছে যে এই রেললাইন উদ্যোগটি একবার সম্পূর্ণ হয়ে গেলেই বিষ্ণুপুরের পোড়ামাটির মন্দির সমৃদ্ধ ঐতিহ্যবাহী স্থানটিকে তারকেশ্বরের বিখ্যাত শিব মন্দিরের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
এই পথটি জয়রামবাটি এবং কামারপুকুরে অর্থাৎ যুগপুরুষ রামকৃষ্ণ পরমহংস এবং মা সারদা দেবীর আদি গ্রামগুলির মধ্য দিয়ে যাবে। ফলে, এমন উদ্যোগে নিয়ে সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক সম্পদ গোরে উঠবে এবং পর্যটকদের কাছে পৌঁছনোর জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক হয়ে উঠবে এই এলাকা।
এই রেললাইনটি কামারপুকুর, জয়রামবাটি, বড়গোপীনাথপুর, ময়নাপুর এবং গোকুলনগর- জয়পুরে প্রস্তাবিত স্টপেজগুলির সঙ্গে হুগলি জেলার পূর্ব রেলওয়ে অংশটি সংযোগ করবে।
এছাড়াও প্রয়াগরাজ, অযোধ্যা, কাটরা এবং খাজুরাহোর মতো দেশের অন্যান্য অংশকে প্রত্যক্ষ করে, রেল সংযোগকে সম্প্রসারিত করে আনুষঙ্গিক ব্যবসা এবং বাজারের বৃদ্ধিকে আরও উৎসাহিত করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এই সময়ে বিষ্ণুপুর-জয়রামবাটি-কামারপুকুর-তারকেশ্বরকে ঘিরে প্রচুর পরিমাণে সড়ক পরিবহনের উপর নির্ভর করে পর্যটক। ফলে, শুধুমাত্র বেশি সময় বয়ে যায় এবং ভ্রমণের ঝুঁকিও তৈরি করে।
হাওড়া-গোঘাট থেকে লোকাল ট্রেনে যাত্রা করলে সময় লাগে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। তবে, যদি এইখান থেকেই বিষ্ণুপুর পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করা হয় তবে সেই সময় গিয়ে দাঁড়াবে আরও ৩০ মিনিটের কাছাকাছি।
অন্যদিকে, বাস যাত্রায় বিষ্ণুপুর পর্যন্ত যেতে সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টার বেশি। সেখানে ইএমইউ ট্রেনে যাত্রা করলে সময় গিয়ে দাঁড়াবে মাত্র ৩ ঘণ্টা। এছাড়াও যেখানে বাস যাত্রা করলে ভাড়া হয় প্রায় ১৫০ টাকা। সেখানে এই ইএমইউ ট্রেনে হাওড়া থেকে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত ভাড়া হবে মাত্র ৩০ টাকা।
তবে, এই প্রকল্পটি শেষ হওয়ার আশা দিলেও, একটি উদ্বেগের মুখে পরেছে পূর্ব রেলওয়ে। সেটি হল ভবাদিঘি পুকুর এলাকা এবং গোঘাট-কামারপুকুর স্ট্রেচের কাছে বসবাসকারী গ্রামবাসীরা তাঁদের জমি দিয়ে রেলওয়ে ট্র্যাক স্থাপনের বিষয়টিতেই নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ফলে, সেই গ্রামবাসীদের এই প্রকল্পের সমস্ত সুবিধাগুলি ও আঞ্চলিক উন্নয়নের কথা বুঝিয়ে একটি প্রতিশ্রুতি তৈরি করতে হবে।
তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেললাইন প্রকল্পটি এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি করবে। ফলে, বাংলার কাছে হয়ে উঠবে ঐতিহাসিক। রেল কর্তৃপক্ষ এখন কর্পোরেট পর্যটন এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের উপর আলোকপাত করার জন্য একেবারে প্রস্তুত। ফলে, সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের সাথে হাত মিলিয়ে যত শ্রীঘ্রই হোক এই রেলওয়ে প্রকল্পটি প্রাণবন্ত হোক।