রাজ্যের জেলাগুলিতে ই-অফিস

রাজ্যের সব জেলায় আসতে চলেছে ই অফিস। মূলত সরকারি দফতরের ফাইলের বোঝা কমাতে এবং কাজকর্মে গতি নিয়ে আসতে এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আধিকারিকদের দাবি, নতুন ব্যবস্থায় সরকারি অফিসে টেবিলে ফাইলের বোঝা কমবে। নতুন এই সফটওয়ারের মাধ্যমে জেলাশাসক সরাসরি যে কোনও ফাইল বা চিঠি নির্দিষ্ট দফতরে পাঠাতে পারবেন।

      আগামী ১ আগষ্টের মধ্যেই সব জেলায় এই ই অফিস চালু করার নির্দেশ দেওয়া হল। প্রত্যেক জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসককে(সাধারণ) উক্ত কাজের নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতি জেলার পাঁচজন অফিসারকে মাস্টার ট্রেনার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে, যাঁরা জেলাস্তরের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের ই অফিস অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়ারের ব্যবহার সম্বন্ধে প্রশিক্ষণ দেবেন।

     আধিকারিকরা বলেন, এক অফিস থেকে আর এক অফিসে কোনও ফাইল বা চিঠির আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে এবার ম্যানুয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে কম্পিউটার ব্যবহার করা হবে। কোনো ক্ষেত্রে ফাইল হারিয়ে যাওয়া অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে ফাইল ফেলে রাখার কোনো সুযোগ থাকবে না নতুন ব্যবস্থা চালু হলে। ফাইল কেন, কোথায় পড়ে আছে, তা সকলেই দেখতে পারবেন। এর ফলে সাধারণ মানুষকে আর সরকারী কাজে হয়রানি হতে হবেনা বলেই আশা করা হচ্ছে।

      প্ৰশাসনিক সুত্রে জানা গেছে, ই অফিস অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়ারের ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট করেছে ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টার। রাজ্যের সেক্রেটারিয়েট স্তরে এই সফটওয়ারের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া পূর্ব বর্ধমান, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণায় পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ই অফিস ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। নতুন ব্যবস্থায় জেলাশাসকের কাছে কোনও চিঠি মেইল-এর মাধ্যমে এলে তিনি সেটা অতিরিক্ত জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। যদি কোনও চিঠি ডাকযোগে বা ফ্যাক্সের মাধ্যমে আসে, তা স্ক্যান করার পর এই অ্যাপ্লিকেশনে আপলোড করতে হবে। এরপর ওই চিঠি তিনি সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছে পাঠাবেন। তারপর অতিরিক্ত জেলাশাসকেরাও ওই ফাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট লাইন ডিপার্টমেন্টে পাঠিয়ে দেবেন। যদি কোনো নোট শিট পাঠানোর প্রয়োজন হয়, তাহলেও ওই সফটওয়ারে তা লিখে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে। জেলাশাসক সরাসরি কোনও চিঠি বা ফাইল কার কাছে পাঠিয়েছেন, তা যে কোনো মুহূর্তে মনিটর করতে পারবেন। কার কাছে কতগুলি ফাইল আটকে আছে, তাও তিনি দেখতে পারবেন। তাছাড়া সরকারি কাজে বহু চিঠি বা ফাইল গোপনীয় হয়। সেইসব ফাইলের গোপনীয়তাও এবার থেকে রক্ষা করা যাবে। অ্যাপ্লিকেশনে ঢুকে যে কেউ ওই সমস্ত ফাইল দেখতে পারবেননা। যার বা যাদের অ্যাকসেস থাকবে, তারাই দেখতে পাবে বিশেষ ফাইল।

     তাই বলাই যায়, আগামী ১ আগস্ট থেকে রাজ্য সরকারি অফিসে অত্যাধুনিক সিস্টেমে কাজকর্ম চালু হয়ে যাবে। বর্তমানে জেলাস্তরে শুরু হলেও আশা করা যায়, ধীরে ধীরে তা ব্লকস্তর অব্দি পৌঁছে যাবে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...