পুজোয় রাস্তায় বেরিয়ে কি খাবার খাবেন তা নিয়ে সঙ্কোচে ভুগছেন? প্লেটের টম্যাটো সস্ কি বিশুদ্ধ? না কি পচা কুমড়োর রাসায়নিক দিয়ে তৈরী? প্লেটের গরম মাংস টাটকা তো? না কি দীর্ঘদিনের বাসি? এমন টেনশন নিয়ে পেটপুজো করতে যাবেন না, মনে সন্দেহ জাগলেই সরাসরি যোগাযোগ করুন কোলকাতা পুরসভার কন্ট্রোল রুমে। আপনার বার্তা পেয়ে মিনিট কয়েকের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবেন স্বাস্থ্য বিভাগের ফুড সেফটি অফিসাররা।
মঙ্গলবার, কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, পুজোর কয়েকদিন শহর জুড়ে ঢালাও নজরদারি চালাবেন ফুড ইন্সপেক্টররা। খাবার তৈরীর মশলা থেকে শুরু করে খাদ্যের গুণমান, বাসি বা পচা কিনা তা পুঙ্খানুপুঙ্খ খতিয়ে দেখা হবে। নিম্নমানের মশলা বা অস্বাস্থ্যকর খাবারে দোষী প্রমাণিত হলেই রেস্তোরাঁ বা খাবারের দোকানের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কলকাতার নামী দামী রেস্তোরাঁগুলিতে খাবারের গুণমান কতটা স্বাস্থ্যকর, তা জানতে আগেই দফায় দফায় অভিযান চালিয়েছেন ডেপুটি মেয়র। একাধিক হোটেলের বিরুদ্ধে নজিরবিহীনভাবে কড়া ব্যবস্থা নিতেও দেখা গেছে। এমনকি, কলকাতার ফুটপাতের খাবারের মান মূহুর্তে পরখ করে নিতে ভ্রাম্যমাণ ফুড ল্যাবরেটরিও চালু করেছেন তিনি। কিন্তু কলকাতার রাস্তায় যে সমস্ত খাবার উন্মুক্ত রেখে গ্রিলড্ করে পরিবেশন করা হয় সেগুলির গুণমান এতদিন সরাসরি পরীক্ষা করে দেখেনি পুরসভা।
সূত্রের খবর, আগামীকাল, মঙ্গলবার, উত্তর কলকাতায় নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন জাকারিয়া স্ট্রিটে এমনই কিছু খাবারের দোকানে কয়েকজন খাদ্য বিশেষজ্ঞকে নিয়ে অভিযানে নামছেন ডেপুটি মেয়র। মাংসের গুণমান ও ব্যবহৃত মশলায় রাসায়নিক মেশানো আছে কি না তা খতিয়ে দেখাই এই অভিযানের উদ্দেশ্য বলে জানা যাচ্ছে।
অন্যদিকে, খাবারের রঙ তৈরীতে ব্রোমাইড, দস্তা, নিকেল জাতীয় একগুচ্ছ রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই ধাতব পদার্থগুলি ক্ষুদ্রান্ত্রের এতটাই ক্ষতি করে যে তা থেকে ক্যানসারের মতো মারণ রোগেরও সৃষ্টি হতে পারে।
প্রসঙ্গত, এই বিষয়গুলিকে মাথায় রেখেই ২৭ সেপ্টেম্বর নিউ মার্কেট, ৩০ সেপ্টেম্বর দমদম বাস টার্মিনাস, ১ অক্টোবর পার্ক্স স্ট্রিট ও ৪ অক্টোবর বাগবাজারে খাদ্য পরীক্ষা করতে ময়দানে নামবেন ডেপুটি মেয়র।
পুজোর ক’দিন পুরসভার ১৬টি অফিসে প্রস্তুত থাকছে ১৬টি টিম। প্রতিটি টিমে থাকবেন একজন করে ফুড সেফটি অফিসার। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন প্রান্ত জুড়ে টহল দেবে ভ্রাম্যমান ফুড ল্যাবরেটরি। এই উপলক্ষ্যে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি কার্যত বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উৎসবের দিনগুলিতে পুরসভার ১০৪টি ক্লিনিকের মধ্যে ৫২টি ক্লিনিকই চালু থাকছে। এ ছাড়া ডেঙ্গু মোকাবিলার জন্য খোলা থাকবে পুরসভার সমস্ত ডেঙ্গু নির্ণয় কেন্দ্র।