দেবী দুর্গার নামের উদ্ভব ও মাহাত্ম্য

দেবী দুর্গার পুজোয় হলো দুর্গোৎসব। তবে মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দুর্গার মোট ১০৮টি নাম রয়েছে। সতী, সাধ্বী, ভদ্রকালী, কালরাত্রি, চিত্রা, শূলধারিণী, সত্যা, কুমারীর মতো দেবীর সেই সকল নামের মধ্যে এই দুর্গা নামটিই বহুল প্রচলিত। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই ১০৮টি নামের মধ্যে দেবী দুর্গার নাম এত গুরুত্বপূর্ণ কেন আর এই নামের মাহাত্ম্য‌ই বা কী? দেবীর প্রত্যেকটা নামের সৃষ্টির পেছনে একটি ইতিহাস আছে, তাহলে দেবীর এই দুর্গা নামের উদ্ভব কীভাবে হল? কী সেই নাম উদ্ভবের কাহিনী?

 

মহিষাসুরকে বধ করে দেবী হয়েছিলেন মহিষাসুরমর্দিনী। ঠিক সেইরকম ভাবে দেবী দুর্গা নাম প্রাপ্ত হওয়ার পিছনেও রয়েছে এই রকমই একটি অসুর বধের গল্প। মার্কন্ডেয় পুরাণের লেখা অনুযায়ী, মহিষাসুরকে বধ করার আগে দেবী আর‌ও একজন অসুরকে বধ করেছিলেন আর সেই অসুর বধ করার দরুন দেবীর নাম হয়েছিল দুর্গা।

 

মার্কন্ডেয় পুরাণের কাহিনী অনুযায়ী, দেবী মহিষাসুরকে বধ করার পূর্বে দুর্গম নামের এক অসুরকে বধ করেন আর এই অসুরকে বধ করার জন্যই তিনি দুর্গা হয়ে ওঠেন। কালিকা পুরাণের লেখা অনুযায়ী দেবী স্বয়ং মহিষাসুরকে বলেছিলেন, “যে রূপে তোমায় বধ করবো, সেই রূপের নাম‌ই দুর্গা।” অর্থাৎ দেবী দশভূজা রূপের নাম‌ই দুর্গা

 

দেবীর অন্য সকল নামের মধ্যে থেকে দুর্গা নামের প্রচলন অনেক বেশি। তার কারণ এই নামের অর্থ! হ্যাঁ দুর্গা নামের অর্থ‌ই বলে দেয় এই নামের মাহাত্ম্য কী। দুর্গা নামের অর্থ ব্যাখ্যা করে হিন্দু শাস্ত্রে বলা হয়েছে একটি শ্লোক, সেটি হল - “দৈত্যনাশার্থবচনো দকারঃ পরিকীর্তিতঃ। উকারো বিঘ্ননাশস্য বাচকো বেদসম্মত।। রেফো রোগঘ্নবচনো গশ্চ পাপঘ্নবাচকঃ। ভয়শত্রুঘ্নবচনশ্চাকারঃ পরিকীর্তিত।।”- অর্থাৎ ‘দ’ অক্ষরটি দৈত্য বিনাশ করে আর ‘উ’ অক্ষরটি বিঘ্ন বিনাশ করে, ‘রেফ’ অর্থে রোগ নাশ করে আর ‘গ’ অর্থে পাপ নাশ করে। অর্থাৎ যিনি দৈত্য, বিঘ্ন, রোগ, পাপ ও শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করেন তিনিই দুর্গা। অর্থাৎ দেবী দুর্গার নামে একই সাথে পাপ, রোগ‌ ও শত্রুর থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যে ব্যক্তি ভক্তি সহকারে দেবী দুর্গার নাম জপ করেন দেবী তাকে সকল দুর্গতির থেকে রক্ষা করেন, তাই এই দুর্গা নামের এত মাহাত্ম্য।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...