সারা বিশ্বে যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সেভাবেই বাড়ছে গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনাও। ভারতে তো বটেই, সারা বিশ্বেই গত ১০ দিনে আচমকাই বেড়ে গিয়েছে নারী নির্যাতন। জাতীয় মহিলা কমিশন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসে ২৯১টি পারিবারিক হিংসার অভিযোগ পেয়েছে তারা। ২৩ মার্চের পর থেকে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত সব অভিযোগই জমা পড়েছে ইমেলে। ফেব্রুয়ারি মাসে সব মিলিয়ে ৩০২টি অভিযোগ জমা পড়েছিল তাদের কাছে। জানুয়ারি মাসে জমা পড়েছিল ২৭০টি অভিযোগ। লকডাউনের সময়ে অভিযোগের মাত্রা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে শুধু ভারত নয়, করোনায় লক ডাউনে চলে যাওয়া বেশিরভাগ দেশেই নারী নির্যাতনের গ্রাফটা হঠাৎই বেশ উর্ধমুখী হয়ে উঠেছে।
ঘরবন্দী জীবন মহিলাদের জন্য এতটাই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে যে তাঁদের নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে জাতিসংঘ ও নারী নির্যাতন নিয়ে কাজ করে চলা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি হটলাইনে নির্যাতনের শিকার নারীদের ফোনকল প্রায় ৬৫ শতাংশ বেড়েছে। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসেও ছবিটা এক।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, তুলনামূলকভাবে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোয় ঘরে যাঁরা নিপীড়নের শিকার হন, করোনার ঘরবন্দী মরসুমে তাঁদের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।
ভারতে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা জানিয়েছেন, উত্তর ভারত, পঞ্জাব থেকেই বেশির ভাগ অভিযোগ জমা পড়েছে।
লকডাউনের জেরে বাড়ি থেকে বাইরে বেরতে পারছেন না। নইলে ডাকযোগে আরও অভিযোগ জমা পড়ত বলেও দাবি করেছেন রেখা। তিনি বলেন, 'শুধুমাত্র ইমেল মারফতই ৫৮ টি অভিযোগ এসেছে'। অনেকে কমিশনের কাছে ডাকযোগে অভিযোগ জানান। সেগুলো পাওয়া গেলে নির্যাতিতার সংখ্যাটা আরও বাড়ত।’’
যাঁরা ইমেল করতে জানেন না, তাঁরা স্থানীয় পুলিশ অথবা রাজ্য মহিলা কমিশনে গিয়েও অভিযোগ জানাতে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
অল ইন্ডিয়া প্রগ্রেসিভ উইমেনস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কবিতা কৃষ্ণণ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত যাঁরা যোগাযোগ করতে পেরেছেন, তাঁদের সকলেই জানিয়েছেন, লকডাউন ঘোষণা হবে আন্দাজ থাকলে সময় থাকতে থাকতেই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসতেন তাঁরা। লকডাউনের জেরে পরিস্থিতি এমন দুঃসহ জায়গায় নিয়ে গিয়েছে যে, যেভাবেই হোক নির্যাতিতাদের কাছে পৌঁছে যেতে হবে সাহায্যকারী সংস্থাকে।