বাংলা ছবিতে এবার দলবদলের গল্প। বিষয়টা তা হলে ভেঙেই বলি। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফুটবলার কৃশানু দে থাকবেন ছবির কেন্দ্রে। শুধু তাই নয়, থাকবে সেই সময়কার আরও এক খ্যাতনামা ফুটবলার বিকাশ পাজির ফুটবলজীবনের নানা কথাও। উঠে আসবে কৃশানু, বিকাশ, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যদের সময়কার ফুটবলের চালচিত্র। তখনকার বাংলার ফুটবলের হাল হকিকত, কে কোন দলে কবে সই করছে, কাকে কোন ক্লাব থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে তা সবই এই ছবিতে দেখানো হবে বলে জানিয়েছেন পরিচালক।
পরিচালক অরিত্র চট্টোপাধ্যায় জানান- “দলবদল নামটা রাখা হয়েছে কাজ শুরু করার জন্য। নামের বদল ঘটতেও পারে। এই ছবিটিকে কৃশানু দে’র বায়োপিক ভাবলে ভুল হবে। তবে তিনিই রয়েছেন কেন্দ্রে। বাঙালির ফুটবল ঘিরে আবেগ উস্কে দিতে এই ছবি। ফুটবল ঘিরে বাঙালির আবেগ, উদ্দীপনা ধরা পড়বে এই ছবিতে। ফের মাঠের নস্ট্যালজিয়ায় ভুগবেন ষাটোর্ধ ফুটবলপ্রেমীরা। আজও ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের খেলা হলে যুবভারতীতে ভিড় উপচে পড়ে। এমনও খেলাপাগল মানুষকে আমি চিনি যারা কলকাতায় থাকে না। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের খেলা হলে ফ্লাইটে চেপে এসে খেলা দেখে আবার ফিরে যান। এঁদের আবেগকে আরও একটু উস্কে দিতেই আমার এই ছবি।”
পরিচালকের এটি ডেবিউ ফিল্ম। তিনি নিজে ফুটবল অনুরাগী। নিয়মিত বড় ম্যাচ দেখতে মাঠে যান। এবং অবশ্যই কৃশানুভক্ত। কৃশানু চরিত্রে্র জন্য তিনি ভাবছেন ঋদ্ধি সেনকে। ‘নগরকীর্তন’ ধারাবাহিকের পুঁটি এবার মাঠকাঁপানো ফুটবলারের চরিত্রে আসতে পারেন। এখনও সেভাবে কথা হয়নি ঋদ্ধির সঙ্গে। তবে, ঋদ্ধির সঙ্গে কৃশানু দে’র আদলে অনেক মিল থাকায় তাঁকেই মুখ্য চরিত্রের জন্য ভাবছেন বলে জানিয়েছেন পরিচালক।
১৯৭৯ সালে কলকাতা পুলিশের হয়ে ফুটবলারজীবনের শুরুয়াত করেন কৃশানু দে। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ অবধি খেলেন মোহনবাগানের হয়ে। এরপর একটানা সাতটি মরশুম খেলেন ইস্টবেঙ্গলের হয়ে। তারপর আবার তিনি ফেরেন মোহনবাগানে। দেশের হয়ে ৪১ বার প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। ফুড কর্পোরেশন অফ কলকাতার কর্মী ছিলেন তিনি। নিজের সংস্থার হয়ে শেষ মাঠে নামেন ১৯৯৭ সালে। দল থেকে অবসর নেওয়ার পর কালীঘাট ক্লাবে কোচিং করাতেই এই দাপুটে ফুটবলার। ২০০৩ সালের ২০ মার্চ মাত্র ৪১ বছর বয়সে মারা যান এই ফুটবলার।
চলতি বছরের শেষের দিকে এই ছবির কাজে হাত দেবেন পরিচালক। গল্প ও চিত্রনাট্য সাজানোর ছাড়পত্র মিলেছে তাঁর।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে হৃষিকেশ মণ্ডল বানিয়েছিলেন মহিলা ফুটবলার ‘কুসুমিতার গপ্পো’। তাঁর জীবনের করুণ কাহিনি এবং খেলোয়াড়জীবন উঠে এসেছিল ছবিতে। এবার বাংলার আরও এক ফুটবলারের জীবনকাহিনি উঠে আসবে বড় পর্দায়।
“বাংলা ছবিতে একাধিকবার খেলার আবির্ভাব হলেও বাঙালি যে পরিমাণ খেলানুরাগী সেই পরিমাণ খেলাকেন্দ্রিক ছবি হয়নি। তাই একজন খেলা প্রেমী মানুষ হিসেবে তাগিদটা অনুভব করেছি বলেই এই ছবিটি বানাতে চলেছি।”—জানান পরিচালক।