পরিবেশের সংরক্ষণে শুধুমাত্র গাছ লাগানোই নয়, বহু বছর ধরে যে গাছগুলি আমাদের ছায়া দিচ্ছে, তাদের যত্ন-আত্তি করাটাও পরিবেশ সংরক্ষণের মধ্যে পড়ে। বইয়ের পাতা বা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বেরিয়ে 'গাছ লাগান, প্রাণ বাঁচান'-এর যথাযথ উদ্যোগ খুব কমই হয়। সেই রকমই একটি উদ্যোগ করে খবরের শিরোনামে এল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। গাছে প্রাণ প্রতিস্থাপন করল তারা।
পাওয়ার স্টেশন তৈরির জন্য কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ চত্ত্বরেই এক প্রান্তে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু হয়েছে বেশ কিছুদিন থেকে। একটি হরিতকি গাছ ছিল সাব-স্টেশন হিসেবে বেছে নেওয়া জায়গাটিতে। কাজের জন্য সেই গাছটি তুলে ফেলার প্রয়োজন হয়েছিল। সেই সময় মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ স্থির করেন গাছটি বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হবে। পরিকল্পনামাফিক বৃহস্পতিবার সেই কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ডঃ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানান, প্রচুর ইউনিট বেড়ে যাওয়ায় পাওয়ার স্টেশন তৈরি করা জরুরী হয়ে পড়েছিল। যেখানে স্টেশন তৈরী করার কথা হল, সেখানে তিনটি গাছ ছিল। তার মধ্যে একটি প্রাচীন ওই হরিতকি গাছ। তাঁরাই বন দফতরকে গাছটি তুলে নিয়ে অন্য জায়গায় রোপন করার কথা বলেন। সেই মত বন দফতরের চেষ্টায় মেডিক্যাল কলেজের সামনে একটি পার্কে ওই গাছটি রোপন করা হল।
বিভিন্ন রকম ওষধি গাছের চাষকে উৎসাহ দিচ্ছে বন দফতর। গোটা বাংলা জুড়েই পিয়াল, রিঠা, আমলকি, হরিতকি এই সমস্ত গাছ লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বন দফতর। জেলাগুলিকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে ভেষজ চাষেও। সাধারণত দেখা যায়, শহরগুলিতে বড় বড় নির্মাণ কাজের জন্য নির্বিচারে উপড়ে ফেলা হয় প্রচুর গাছ। চিরাচরিত সেই ধ্বংসলীলার বিরুদ্ধে কাজ করে এক উদাহরণ তৈরী করল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। শুধুমাত্র মানুষের প্রাণ বাঁচানোই নয়, জীব জগতের অস্তিত্ব রক্ষাতেও যে ডাক্তারেরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে সেটাই দেখিয়ে দিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ও কর্তৃপক্ষরা।