চীন দেশের চু-চেন- তাং

সেবার রাত পোহাতেই সাড়া পড়ে গেল পিকিং শহরে। চীন মেতে উঠল চু-চেন- তাং কে নিয়ে। সুদূর বাংলায় ক্যালেন্ডার অনুযায়ী দিনটা যে ২৫ বৈশাখ।
কিন্তু কে এই চু- চেন-তাং?
চু- চেন-তাং শহরের রাজ অতিথি। দিনটা তাঁর জন্মদিন। চু-চেন-তাং শব্দের ন্যায় 'পরাক্রান্ত ভারত- সূর্য'। চীনের মানুষ ভালোবেসে এই নামেই ডাকতেন রবীন্দ্রনাথকে। ১৯২৪ সালে তিনি প্রথম চীন সফরে যান।
তখন কবি সদ্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন গীতাঞ্জলি কাব্য লিখে। সারা বিশ্ব থেকে আমন্ত্রণ আসছে কবির কথা শোনার জন্য। পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ও তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। কবিও খুব আন্তরিক ভাবে গ্রহণ করলেন সেই আমন্ত্রণ।
কবি আসছেন এ খবর ছড়িয়ে পড়া মাত্রই উৎসব শুরু হয়ে গেল চীনে।
দেশের ছাত্র, যুবক শুরু করে সকল সাধারণ নাগরিক চীন সরকারের কাছে আবেদন জানাল কবিকে যেন চীন সম্রাটের রাজপ্রাসাদে রাখা হয়।
সানন্দে সেই প্রস্তাবে সাড়া দিলেন চীনের সম্রাট।
পিকিং শহরে কবি পা দিতেই লোক ভেঙে পড়ল তাঁকে দেখতে।
কিন্তু তাঁদের মনে হল কবি কই! এ যে এক মগ্ন ঋষি।
চীন সম্রাট তাঁকে চারশো বছরের প্রাচীন এক ছবি উপহার দিলেন।
কবি সেবার তাঁর জন্মদিনটি চীনেই কাটিয়েছিলেন। চীন দেশের প্রাচীন রীতিতে পালিত হয়েছিল দিনটি।
নীল পাজামা কমলা কিমানো, মাথায় বেগুনি টুপিতে সাজানো হয়েছিল তাঁকে। বহু জনতার মাঝে কবি জানিয়েছিলেন সেই দেশের প্রতি তাঁর ভালোবাসার কথা।
চীনের মানুষের থেকেই সেদিন এমন আদরের নাম পেয়েছিলেন কবি। তাদের কথা দিয়েছিলেন আবার আসবেন চীনে।
সেই কথা রেখেওছিলেন তিনি। চারবছর পর আবার যান চীন সফরে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...