স্টিরিওটাইপকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন তিনি। একেব রে নতুন এক রাস্তা দেখিয়েছেন নিজ র গ্রামের মেয়েদের জন্য।
বাবা-মা বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তিনি চাকরির অজুহাত দিয়ে আটকেছিলেন বাবা-মা’কে। মাঠ থেকে নির্বাসনে পাঠাবার আয়োজনকে আটকাতে মহৌষধীর কাজ করেছিল ‘চাকরি’। সে যাত্রা নিস্তার পেয়ে গিয়েছিলেন পাতিয়ালার এই মেয়ে। সুযোগকে হাতছাড়া করেননি। স্বপ্নের জার্নিতে উড়ান পাড়ি দিয়েছিল সূর্যোদয়ের দেশে। টোকিও অলিম্পিকের আসরে। মেয়ের নাম কমলপ্রীত কৌর।
টোকিও অলিম্পিকে পদকের লড়াইতে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন। কিন্তু দেশের মেয়েদের আরও বেশি করে খেলার দুনিয়ায় টেনে আনার অনুপ্রেরণা তিনি।
পাতিয়ালার কাবারওয়ালা গ্রামের মেয়ে। দেশের আর পাঁচটা গ্রামের থেকে এ গ্রামের চরিত্র খুব একটা আলাদা নয়। হয় পড়াশোনা করো, নয় ঘরের কাজ শেখায় মন দাও। এর বাইরে খুব বেশি কিছু ভাবার উপায় নেই সেই গ্রামের মেয়েদের জন্য। এমন পরিসর থেকেই কমলপ্রীতের উঠে আসা।
নিজের খেলা এবং খেলোয়াড় জীবন সম্পর্কে ভীষণ সচেতন কমলপ্রীত। তাঁর কথায়, “গ্রামের একটা মেয়ের ভুল একশোটা মেয়ের জীবনে প্রতিবন্ধ হয়ে দাঁড়াবে।”
সেই ভুলের উদাহরণ দিয়ে ঘরেই আটকে দেওয়া হবে তাদের।
অলিম্পিকে ডিসকাসের ফাইনালে পৌঁছেছিলেন। ছয় নম্বরে শেষ হয় তাঁর লড়াই।
টোকিও অলিম্পিকে ঘরের মেয়ের সাফল্যে গোটা গ্রাম ভেঙে পড়েছিল কমলপ্রীতদের বাড়িতে। বাবা কুলদীপ সিং মিস্টিমুখ করিয়েছিলেন সক্কলকে।
মা রাজবিন্দার কৌর ভিডিয়ো কল করেছিলেন মেয়েকে। আবেগে কেঁদে ফেলেছিলেন মা-মেয়ে দু’জনেই।
গোটা গ্রামে অকাল-দীপাবলী। আতসবাজীর আলোয় যেন সেদিন ভেসে যাচ্ছিল বাধার অন্ধকারগুলো। যে বাধার সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করতে করতে সূর্যোদয়ের দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন কমলপ্রীত।
এই আলো স্বপ্ন হয়ে আজ ছড়িয়ে পড়েছে আরও অনেক কমলপ্রীতের চোখে। সেখানেই আসল চ্যাম্পিয়ন কমলপ্রীত আর তাঁর অলিম্পিকের সঙ্গীরা।
কমলপ্রীত বলেছিলেন, “ভুলের উদাহরণ নয়, আমার গ্রামের মেয়েদের কাছে আমি ভালোর উদাহরণ হতে চাই”। সেই লক্ষ্যে সফল তিনি। চোখ রেখেছেন বদলের ঢেউয়ে...