ফের জাতীয় পুরস্কার ফেলুদার!

সত্যজিৎ রায়ের অনন্য সৃষ্টি গোয়েন্দা ফেলুদার গল্প প্রথম প্রকাশের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি পূর্ণ দৈর্ঘের তথ্যচিত্র বানিয়ে সাড়া ফেলেছেন পরিচালক সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায়। সাগ্নিক নির্মিত তথ্যচিত্রটি হল- ‘ফেলুদাঃ ফিফটি ইয়ারস অফ রে’জ ডিটেকটিভ’। পরিচালকের প্রথম এই কাজটিই তাঁকে এনে দিল জাতীয় পুরস্কার। তাও আবার একটি নয়, দুটি ক্যাটাগরিতে জাতীয় পুরস্কার পেলেন তিনি। চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ নবাগত পরিচালকের পুরস্কার পেলেন সাগ্নিক। পাশাপাশি শ্রেষ্ঠ প্রথম নন-ফিচার ফিল্মের পুরস্কার পেয়েছে এই তথ্যচিত্রটি। প্রসঙ্গত, বাংলায় এই প্রথম কোনও কাল্পনিক চরিত্রকে নিয়ে তৈরি হল তথ্যচিত্র। সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘সোনার কেল্লা’, ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এর শুটিং-এর জায়গা, ফেলুদাকে নিয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের নানান অভিজ্ঞতা এই সবই উঠে এসেছে এই তথ্যচিত্রে। পাশাপাশি ফেলুদার বিভিন্ন ছবিতে অভিনয় সহ নানাভাবে জড়িত ব্যক্তিদের দেখা গিয়েছে এই তথ্যচিত্রে। যেমন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়, আবির চট্টোপাধ্যায়, মোহন আগাসে, আশিস নন্দী, শ্রীকান্ত আচার্য, রমেশ সেন, ঋত্বিক চক্রবর্তী, সাহিত্যিক স্মরণজিৎ চক্রবর্তী, বিশিষ্ট শিল্পী দেবাশিস দেব সহ আরও অনেকে রয়েছেন নানা ভূমিকায়। রমেশ সেন রয়েছেন ফেলুদার চরিত্রে। শশী কাপুরকে নিজের এই প্রথম জার্নিতে না পাওয়ায় একটা আফশোস থেকে গিয়েছে বলে জিয়ো বাংলাকে জানিয়েছেন পরিচালক। 

জিয়ো বাংলাকে সাগ্নিক জানান- “প্রথম কাজের জন্য পুরস্কার পেলে কার না ভাল লাগে! ফেলুদার জন্যই সব হল। ছবির পরিচালক এবং প্রযোজক দুই’ই আমি। ভালবাসা থেকে কাজটা করেছি। অনেক যন্ত্রণাও পেতে হয়েছে। যিনি প্রযোজনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি মাঝ পথে ছেড়ে চলে যান। হাল ধরতে হয় আমাকেই। সঞ্চিত অর্থ আর ক্রাউডফান্ডিং-এর সাহায্য নিয়ে কাজটা শেষ করি। যেহেতু একেবারে নিজের হাতে তৈরি তাই অনুভূতিটা খানিকটা নিজের সন্তান লালনের মতো।

sagnik-2

২০০৯-১০ সাল থেকে ফেলুদাকে ঘিরে এহেন কাজ করার কথা ভেবেছিলেন তিনি। কাজ শুরু করেন ২০১৪ সালে। পরিচালক সাগ্নিকের ইচ্ছে ছিল তথ্যচিত্রটি যাতে কোনও প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। আর হলও তাই। চলতি বছরেই নন্দন, প্রিয়া এবং নজরুল তীর্থে মুক্তি পায় তথ্যচিত্রটি। প্রথম এটি মুক্তি পায় ২০১৭-তে নিউইয়র্ক ইন্ডিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। ১ ঘণ্টা ৫৬ মিনিটের এই তথ্যচিত্রটি আরও একবার সেপ্টেম্বরে প্রদর্শনের কথা মাথায় আছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক। 

sagnik-1

পুরস্কারদুটিকে ফেলু মিত্তিরের অনুরাগীদের উৎসর্গ করেছেন তিনি। পুণে সিম্বায়োসিসের শিক্ষক যোগেশ মাথুরের কাছে সিনেমার হাতেখড়ি নিয়েছেন সাগ্নিক। তাঁকেও এই তথ্যচিত্রটি উৎসর্গ করেছেন তিনি। তাঁর এই সাফল্যে সন্দীপ রায় এবং তাঁর স্ত্রী ললিতা রায় দুজনেই খুব খুশি বলে জানিয়েছেন পরিচালক স্বয়ং। শুভেচ্ছাবার্তা পেয়েছেন টলিউডের বহু মহারথীদের কাছ থেকে। আর তাই বেশ আপ্লুত সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায়।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...