দক্ষিণেশ্বরে আছেন মা ভবতারিণী। দীপান্বিতা অমাবস্যায় কালী পুজো উপলক্ষে বিশেষ আরাধনা করা হয় মায়ের। অমানিশায় মায়ের আরাধনা চাক্ষুস করার জন্য বছরভর অপেক্ষা করে থাকেন ভক্তরা। দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন মন্দিরে। যাঁরা আসতে পারেন না তাঁরা দূর থেকেই টেলিভিশনের পর্দায় দেখেন মেকে।
কালীপুজো উপলক্ষে অন্তত দশদিন আগে দেবী মায়ের অঙ্গরাগ শুরু হয়। কালীপুজোর দিনে ভোরে বিশেষ মঙ্গল আরতিই পুজোর প্রধান আকর্ষণ। এছাড়া রয়েছে ঘট স্নান। যে ঘটটি মন্দিরে থাকে সেটিকেই গঙ্গায় নিয়ে গিয়ে নতুন করে জল ভরে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়।
কালীপুজোর রাতে ডাবের জল দিয়ে পুজো করা হয়। শ্রীরামকৃষ্ণের পথেই আরাধনা হয় ভবতারিণীর। এই পুজোয় থাকে নানাবিধ ভোগ-উপচার। সাদাভাত, ঘি, পাঁচরকমের ভাজা, শুক্তো, তরকারি, চার থেকে পাঁচরকমের মাছের পদ, চাটনি, পায়েস আর মিষ্টি নিবেদন করা হয়।
ভোর থেকে মন্দির ভক্ত সমাগম শুর হয়। পুজো শেষের পর মায়ের ভোগ ভক্তদের হাতে হাতে দেওয়া হয়। কালীপুজোয় বলিপ্রথা বন্ধ। চার প্রহরে মা ভবতারিণীর পুজো হয়।
রাজ বেশে সাজানো হয় ভবতারিণী মাকে। অন্যান্য দিনের মতো বেনারসি পরানো হলেও দীপান্বিতা উৎসবের সাজ হয় আরও উজ্জ্বল। পরানো হয় সোনার অলঙ্কার। সোনার বাউটি, বালা, তাবিজ, বাজু, গলায় চিক, মুক্তোর সাতনর মালা, বত্রিশনর, তারাহার, সোনার মুণ্ডমালা। মাথায় মুকুট। কানে কানবালা, কানপাশা, ঝুমকো। নাকে নোলক ও নথ। এছাড়াও অন্যান্য বহু অলঙ্কারে সুসজ্জিত হন মা।
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের একটি বিশেষ বিষয় হল এখানে মা সারাবছর বেনারসি শাড়ি পরিধান করেন।
১৮৫৫ সালে রানি রাসমনি এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর থেকে রামকৃষ্ণদেবের সাধনাস্থলে পরিণত হয় দক্ষিণেশ্বর মন্দির।