বেদ-পুরাণের যুগে শুরুর দিকটাতে সরস্বতী ছিলেন নিতান্তই একজন হাউস ওয়াইফ। হাজব্যান্ড ছিলেন নারায়ণ। সংসারের খুঁটিনাটির ভার ছিল তাঁর ওপর। একদিন সতীন গঙ্গার অভিশাপে তিনি নদী হয়ে গেলেন। নদীর নামও হল ‘সরস্বতী’। অমনি ডিপার্টমেন্ট চেঞ্জ হয়ে গেল। তিনি হয়ে গেলেন ‘জলের দেবী’। মুনিঋষিরা এসে সরস্বতী নদীর ধারে আশ্রম তৈরি করলেন। ছাত্র জুটিয়ে শাস্ত্রশিক্ষা দিতে লাগলেন। এই নদীর মনোরম পরিবেশে ছাত্রদের পড়াশুনোয় বেশ উন্নতি হতে লাগল। সকলেই ভাবল, এটা নিশ্চয় এই নদীর হাওয়া আর জলের কামাল। এর জন্যই তাদের বিদ্যার উন্নতি হচ্ছে। তখন ধীরে ধীরে ‘জলের দেবী’ থেকে সরস্বতী হয়ে গেলেন ‘বিদ্যার দেবী’।
কিন্তু এই ‘উন্নয়ন’ হঠাৎ থমকে গেল। দেশটাতে গ্রিক এলো, তুর্কী এলো, মুঘল এলো, ফ্রেঞ্চ এলো, ইংরেজ এলো, ফ্রিডাম এলো, তবু বিদ্যা থেকে দেবীকে একচুল নড়ানো হল না। এখন ‘ডিজিট্যাল’ এসেছে, কাগজ-কলম উঠে যেতে বসেছে। দেবীর কাছে বিদ্যে আর কেউ চায় না। পুজো আর অঞ্জলির ছুতোয় দেবীর সামনেই শুরু হয় ডেটিং, কারও বা সামনের ভ্যালেন্টাইনে ডেটিং-এর লিস্টি জমে। দেখেশুনে দেবী ঠোঁট কামড়ে ভাবেন, ‘ইস, লাভ ডিপার্টমেন্টটা যদি একবার পেতাম!’
পাবে মা পাবে, সব পাবে। মাগো, একবার ডুব দাও দিকি মন কালী বলে!