কুলিং ফেস প্যাক

দিনের পর দিন গরমের দাপট বেড়েই চলেছে। গরমে বাইরে বেরোলে যদি চোখমুখ ঠিকভাবে না ঢেকে চলেন তাহলে তো আর রেহাই নেই। সুয্যিমামার তেজে মুখ থেকে শুরু করে হাত ও পা সব পুড়ে কালো। ট্যান পড়া যাকে বলে আর কি। সেই ট্যান তুলতে গিয়েই জীবন কয়লা হয়ে যায় সকলের। একবার মুখে রোদের তেজ লাগলে সেই গরম সহজে কমতেও চায় না। ফলে ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, ফুসকুড়ি হওয়া প্রভৃতি সমস্যা হতে পারে। সেই জন্য অনেকেই রাস্তায় বেরোলে সানগ্লাস পড়ার সাথে সাথে ওড়নাজাতীয় জিনিস দিয়ে মুখও ঢেকে নেয়। কিন্তু যাদের রাস্তায় ঘুরে কাজ করতে হয় তাদের ক্ষেত্রে এই সুযোগ থাকে না। তাদের ক্ষেত্রে রূপচর্চার বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। এই পদ্ধতি যে শুধু বাইরে কাজ করা মানুষদের জন্য তা কিন্তু নয়। এই পদ্ধতিটি সকলের জন্যই যারা দিনের বেলায় বাইরে বেরোন এবং ট্যানের শিকার হন।

আমরা সকলেই জানি ত্বকের উপর ফেসপ্যাকের প্রভাব কি। ফেসপ্যাক একদিকে যেমন ত্বকের থেকে ধুলোবালি বের করে দেয় সেরকম ত্বক ভালো রাখতেও সাহায্য করে। কিন্তু বাজারচলতি ফেস প্যাকে অনেক ধরণের কেমিক্যাল থাকে তাই বাজারচলতি ফেসপ্যাকের থেকে ঘরোয়া ফেস প্যাক ব্যবহারই শ্রেয়। আলুর রস, টমেটোর রস, বেসন, মুসুর ডাল প্রভৃতি যে রূপচর্চার ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হয় তা সকলেরই জানা। চলুন আজ এইসব দিয়ে কিভাবে ফেসপ্যাক তৈরী করবেন তা নিয়ে আলোচনা করা যাক.....

১) এই গরমে ত্বকের জন্য সবচেয়ে ভালো হলো টকদই। এর সাথে যে কোনো ফল। ফল ত্বক ঠান্ডা করতে সাহায্য করে। আর টকদই ত্বকের থেকে ধুলোবালি বের করতে সাহায্য করে থাকে। তাই এক কাপ টক দইয়ের সাথে কয়েকটি তরমুজের টুকরো মিশিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। এবার এই প্যাক সারা মুখে লাগিয়ে রেখে দিন। মিনিট ২০ মতন রেখে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন। গরমকালে বাতাসে লু বওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। সেই সময় ত্বক ঠান্ডা রাখা খুবই দরকার। এইসময় এই প্যাক ব্যবহার করলে ত্বক খুব তাড়াতাড়ি রিলাক্স করতে পারে।

২) লেবুর রস ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করে থাকে। কিন্তু লেবুতে সাইট্রিক অ্যাসিড থাকার কারণে তা রূপচর্চার ক্ষেত্রে খুব বেশি ব্যবহৃত হয় না। অন্যদিকে অ্যালোভেরা ত্বককে আর্দ্রতা প্রদান করে থাকে। তাই দুই চামচ অ্যালোভেরা জেল এবং তার মধ্যে কয়েকফোঁটা লেনুর রস মিশিয়ে যদি সারামুখে মাখা যায় তাহলে গরমে ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেলের নিঃসরণ যেমন বন্ধ হবে তেমন ত্বক আর্দ্রও থাকবে। এটিও মুখে মেখে ২০ মিনিট মতো রেখে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

৩) ত্বকের থেকে জ্বালা এবং চুলকানির প্রভাব দূর করতে সক্ষম হলো পুদিনা বা মিন্ট। অন্যদিকে, মুলতানি মাটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নিতে পারে। তাই পুদিনা ও মুলতানি মাটির সংমিশ্রণ ত্বকের পক্ষে খুব ভালো প্রমাণিত হতে পারে। এর জন্য এক আঁটি পুদিনা পাতা ভালো করে ধুয়ে বেটে নিন। এই রসটি হাফ কাপ মুলতানি মাটির সাথে মিশিয়ে একটি প্যাক বানিয়ে নিন। এবার এই প্যাক সারা মুখে মেখে আধ ঘন্টা রেখে দিন। মিশ্রণটি সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে তবেই ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

৪) শশা এবং মধুর সংমিশ্রণও এই গরমে ত্বকের জন্য খুব উপকারী। অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যাওয়া ত্বকে পুনরায় আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে সিদ্ধহস্ত হলো মধু আর ত্বক ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে শশা। একটা তাজা শশা গ্রেট করে নিন। এবার এর সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে এই প্যাক মুখে মাখুন। ত্বক ঠান্ডা হবে আর ফুসকুড়ির হাত থেকে রক্ষা পাবে।

তাই গরমে বাইরে বাইরে ঘুরতে হলেও চিন্তা করার দরকার নেই। হাতের কাছে এইসব ঘরোয়া উপায় থাকলে আর চিন্তা কিসের? এইভাবেই ট্যান কমান আর ফিরে পান ঝলমলে ত্বক প্রতিবার।  

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...