প্রচন্ড গরমে কাহিল সকলে। বাইরের অত্যন্ত বেশি রোদের হাত থেকে বাঁচার জন্য ছাতা এবং জলই ভরসা সাধারণ মানুষের। শরীর সুস্থ রাখার উদ্দেশ্যে চিকিৎসকেরা মানুষকে বাইরে বেরোতে বারণ করলেও কাজের চাপে প্রতিদিনই বাইরে বেরোতেই হয় সাধারণ মানুষকে। এই প্রচন্ড গরমে জ্বর সর্দি কাশি লেগেই রয়েছে প্রতিটি বাড়িতে। আর তার সাথে সাথেই যে সমস্যাটি প্রতি বাড়ির সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে তা হলো পেটের সমস্যা।
ভোজনরসিক বাঙালির কাছে অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক একটি অনুভূতি হলো পেট কামড়ানো। মন চায় অনেক কিছু খেতে কিন্তু পেটের কথা মনে পড়লে সেটাও আর হয়ে ওঠে না। কিন্তু গরমে পেটের হাল কিভাবে ঠিক রাখা যায় চলুন এই নিয়েই আজ আলোচনা করা যাক। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই প্রচন্ড গরম চলাকালীন বেশি ভারী ও তেলমশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। বাইরের নানা প্রকারের পানীয়, কোল্ড ড্রিঙ্কস, আইস ক্রিম প্রভৃতি খাওয়ার ফলে একদিকে যেমন থাকে ঠান্ডা লাগার আশঙ্কা সেরকমই থাকে পেটের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কাও। তাই গরমের সময় এইসব খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শই দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এই সময় বড়দের পাশাপাশি অসুস্থ হতে দেখা যায় শিশুদের। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, তাদের এই সময় বাড়িতে তৈরী খাবার দেওয়াই শ্রেয়।
চিকিৎসকদের বক্তব্য, গরমের প্রভাবে পেটের সমস্যা থেকে ডায়রিয়া এবং তারপর জ্বর এখন প্রতিবাড়ির নিত্যদিনের ঘটনা। ভাইরাসঘটিত কারণে পেটের সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত কারণেও পেটের সমস্যা হানা দিচ্ছে বাড়ি বাড়ি। ই-কোলাই, স্যালমনেলা, শিগেল্লা প্রভৃতি ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণেই মূলত জেরবার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এছাড়াও যেসব ভাইরাস পেটের গন্ডগোল ঘটেছে তারা হলো মূলত রোটা ভাইরাস ও অ্যাডিনো ভাইরাস। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, গরমের এই মরশুমে তাদের কাছে জ্বর সর্দি কাশিতে আক্রান্তের থেকে পেটের সমস্যায় ভুগছেন এরকম মানুষই বেশি আসছেন। সবচেয়ে বেশি আসছে শিশুরা। তাই চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এইসময় শিশুরা যতই পিৎজা বা বার্গারের জন্য জেদ করুক না কেন, শিশুর শরীর সুস্থ রাখতে হলে এড়িয়ে যেতেই হবে এইসব।
জানা যাচ্ছে, ভাইরাসঘটিত কারণের থেকে ব্যাকটেরিয়া ঘটিত কারণের ফলে পেটের গন্ডগোল বেশি হচ্ছে। এছাড়াও রয়েছে বাইরের অতিরিক্ত তেল মশলা যুক্ত খাবার যা পেটে পৌঁছে হজম হতে অত্যধিক বেশি সময় নিচ্ছে ফলে হজমের সমস্যা এবং গ্যাসের সমস্যাও এর সাথেই দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই সময় ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দিলে ঘন ঘন ওআরএসের জল পান করুন। বাড়িতে ওআরএস না থাকলে শুধু নুন ও চিনি মিশ্রিত জলও পান করতে পারেন। এই সময় শরীর যতটা সম্ভব ঠান্ডা রাখা চেষ্টা করুন তবে রোদ থেকে ফিরেই এসিতে ঢুকে যাবেন না তাতে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। গরমে প্রচুর ফল খান এবং বাড়ির শিশুদেরও খাওয়ান। দেখবেন রোগজীবাণু কাছে ঘেঁষতে পারবে না।