"কলকাতার রাস্তায় "
আমার শহরের খাওয়ারের বাহার অনেক। কোনটা ছেড়ে কোনটা দেখবো সেটাই ভাবা মুশকিল হয়ে পড়ে। বাঙালির পেটুক মন কিন্তু সব খাওয়ারকেই পেটে জায়গা দিয়ে ফেলে। হরেকরকম দোকান আর হরেকরকম স্বাদে আমার শহর রোজ 'ম' 'ম' করে। শহর নিয়ে বলার আছে অনেক, কিন্তু আজ বলব যা আমরা রোজ খাই, রোজ পেট ভরিয়ে বাড়ি ফিরি। এক অন্য জায়গার খাবার, যা ধীরে ধীরে বাঙালির রক্তে ঢুকে গেছে। মিশে গেছে আমার শহরের সাথে।
'ধোসা,সাম্বার আউর ইডলি"
হ্যাঁ, তারা একেবারে তিন ভাই বটে। 'south indian' খাবার কিন্তু এখন রাস্তায় রাস্তায় আর ঘরে ঘরে,আবার খিদে পেলে মনে মনেও। অদ্ভুত তিনখোপের থালায় থাকবে তিনটে চাটনি আর এক লম্বা মাসালা ধোসা। আমরা হয়ত সবাই নারকেল চাটনি শেষ করে আবার চেয়ে বসে থাকি, দোকানকাকুরাও দিয়ে দেয় চাইতেই। আজ ঠিক তেমন এক দাদার সাথেই কথা বললাম যারা আমাদের মতো কিছু পেটুকদের বাড়তি চাটনি দিয়ে দেয় হেসে হেসে।
"কথা, গল্প আর এক প্লেট ইডলি "
তাদের রোজকারের দিনে তারা কখনো ভাবে না যে কেউ এসে তাদের সাথে গল্প করতে করতে খেতে খেতে প্রশ্ন করে যাবে। তাই প্রথমে সেই দাদা লজ্জায় লাল হয়ে যায়। তার নাম জিজ্ঞেস করলে খুব লজ্জা পেয়ে আর গলার স্বর ধীরে করে বলে -কাঞ্চন গিরি (হালকা হেসেও ফেলেওছিল )
বিক্রি তার ভালোই হয়।
তার মতে 'সকালের সময়ে খুব বিক্রি হয় '
এই গরমে সত্যিই বেশি মশলা আর তেল খেতে সবারই অস্বস্তি হয়। তাই সকালে অফিস যাওয়ার পথে ধোসা বা এক প্লেট ইডলি বাড়তি চাটনির সাথে খেয়ে বেরিয়ে পড়াই যায় অফিসের দিকে।
একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে দিই দাদার দিকে
'কোথা থেকে শেখা এই দক্ষিণী খাবারগুলো ?'
দাদাও কাজে মগ্ন থেকে উত্তর দেয় ' এইসব খাবার আমার দাদার থেকেই শেখা '
পরে কথা বলে জানতে পারি তারা দুই ভাই মিলেই এই দোকান চালায়। তাদের বাড়ি মেদিনীপুর কিন্তু বাড়ি ছেড়ে এখানে এসে তারা কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু কেন এই দক্ষিণী খাওয়ার বানানো শুরু করা?
'এই খাওয়ারই বেশি চলে কলকাতায় ' গরম কালে মানুষের ভিড় পড়ে যায় দোকানে। স্বাদ, লোভ সব বাদ দিয়ে দেখতে গেলে সত্যিই এই খাবার খুব হালকা। গরমে খাওয়ার মতো একেবারে যথাযথ।
কালীঘাট মেট্রো স্টেশনের 'লেক মার্কেটের' গেট দিয়ে নামলেই থাকে সারি সারি দোকানের মধ্যেই আমাদের এই ধোসা, ইডলি আর সাম্বার।
বাড়তি চাটনির সাথে একবার কলাপাতায় মোড়া ধোসা, ইডলি চেখে আসাই যায়।