ডার্বি বললে সাধারণত দুটোই পতাকা ভেসে ওঠে সবার চোখে। লাল-হলুদ আর সবুজ মেরুন। একটা জ্বলন্ত মশাল আরেকটা পালতোলা নৌকো। দুই শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের ময়দানী লড়াই। ব্রিটিশ শাসনাধীন অবিভক্ত ভারতে ১৯২১ সালের ৮ অগস্ট কোচবিহার কাপে যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সূচনা হয়েছিল, সেটাই পরবর্তী পর্যায়ে দেশের সেরা লড়াইয়ে উন্নীত হয়। কোচবিহারের কাপের সেমিফাইনালে প্রথম বার মুখোমুখি হয় দুই প্রধান। ম্যাচটি গোলশূন্য ভাবে শেষ হয়।
মোহনবাগানের ৩৩ বছর পর ইস্টবেঙ্গলের জন্ম। বাঙাল বলে নসা সেন এবং শৈলেশ বসু জোড়াবাগান ক্লাব থেকে বাদ পড়েন। সেই রাগে কয়েক জন পূব-বাংলা থেকে আসা মানুষ ১ অগস্ট ১৯২০-তে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। যে কোচবিহার কাপের দল থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছিল, পরের বছর ১৯২১-এর ৮ অগস্ট সেই কাপেরই সেমিফাইনালে আজকের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানের মুখোমুখি হয় তারা। ম্যাচ গোলশূন্য থাকার পর রিপ্লেতে মোহনবাগান জিতে যায় ৩-০ ব্যবধানে। এই বছরই খগেন্দ্রনাথ শিল্ড ফাইনালে প্রবল লড়াইয়ে ইস্টবেঙ্গল ২-১'এ ছিনিয়ে নেয় ট্রফি। জয়-পরাজয়ে ১৯২১-এ ইতিহাস জন্ম দেয় আজকের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের 'ডার্বি' ম্যাচের।
তখন ইস্টবেঙ্গল সদ্য ভারতীয় ফুটবল অ্যাসসিয়েশনের সদস্যপদ পেলেও দ্বিতীয় ডিভিশনে লীগ খেলার অনুমতি ছিল তাদের। অন্যদিকে ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত 'মোহনবাগান স্পোর্টিং ক্লাব' বাংলা ফুটবলের অন্যতম নাম হয়ে উঠেছে তখন। তবে ইতিহাসের পাতায় প্রথমবার ডার্বি হিসাবে লেখা আছে ১৯২৫-এ দু'দল মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা৷ মোনা দত্তের নেতৃত্বে ১-০ ম্যাচ জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল৷ একমাত্র গোলটি করে ইতিহাসে নাম লিখিয়ে ছিলেন নেপাল চক্রবর্তী।
ক্রমশ ঘোড়দৌড়ের উত্তেজনার আঁচ ধার করে এই দুই দলের বড় ম্যাচ হয়ে উঠেছে 'ডার্বি'। বছর কুড়ি আগেও 'ডার্বি' শব্দের ব্যবহার শোনা যায়নি। ১৯৯৭-এর ফেড কাপ সেমিফাইনালের 'মহারণ' নামে খ্যাত ম্যাচটিও 'ডার্বি' আখ্যা পায়নি। ই পি এল, লা-লিগা, সিরি-এ, বুন্দেশলিগা থেকে ডার্বি কথাটির উৎপত্তি সম্ভবত। লাজিও-রোমা, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড-ম্যাঞ্চেস্টার সিটি, আটলেটিকো মাদ্রিদ-রিয়াল মাদ্রিদ-এর তুমুল উত্তেজনার ম্যাচগুলির মতো ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচটিও ডার্বির মর্যাদা পেয়ে যায়।
সাংস্কৃতিকভাবে, এই ডার্বি স্কটিশ প্রিমিয়ার লিগ এর পুরাতন ফর্ম ডার্বির মত, যেহেতু মোহন বাগানের সমর্থকরা বেশিরভাগ 'ন্যাটিভিস্ট' জনসংখ্যার প্রতিনিধিত্ব করে (রেঞ্জার্স এফসি অনুরূপ) এবং বেশিরভাগ ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরা 'অভিবাসী' জনসংখ্যা (সেল্টিক এফসি এর অনুরূপ) প্রতিনিধিত্ব করে। যাইহোক, বাংলাদেশে অনেক মানুষই মোহনবাগানের সমর্থন করে, কারণ এটি ভারতের প্রাচীনতম ফুটবল ক্লাব। একইভাবে, পশ্চিমবঙ্গের অনেক মানুষ আবার ইস্টবেঙ্গলকে সমর্থন করে বলে, 'এটা ফুটবল ক্লাব অফ ইন্ডিয়া'। সুতরাং অপর পক্ষ থেকেও নিজেদের দিকে সমর্থন টেনেছে দু'দলই।
পরিসংখ্যান বলছে, গত ১০০ বছরে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহন বাগান ৩৫০ টির বেশি ডার্বি ম্যাচের ঐতিহাসিক মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এখনও পর্যন্ত, মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের সাক্ষাৎ হয়েছে ৩৭৩ বার। ইস্টবেঙ্গল জিতেছে ১২৯ বার। মোহনবাগান জিতেছে ১২২ বার। খেলা অমীমাংসিত থেকেছে ১২২ বার। দেশে-বিদেশে ইস্টবেঙ্গলের প্রাপ্তি ১২৯টি ট্রফি, মোহনবাগানের ১০১টি।
এই ডার্বির মর্যাদা এমনই যে, এক ম্যাচেই এক জন ফুটবলার বা কোচ রাতারাতি হিরো কিংবা ভিলেন হয়ে যেতে পারেন। ক্লাব যদি টুর্নামেন্টের সপ্তমেও থাকে, ডার্বি জিতলে সমর্থকরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দ পালন করেন। যেমন, ১৯৯৭ সালের ফেডারেশন কাপের ফাইনালে সালগাঁওকরের কাছে হেরে ট্রোফি না পাওয়ার দুঃখ ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা ভুলে যায় সেমিফাইনালে ডার্বি জয়ের আনন্দে। ১৯৬৭-তে ইডেনে কলকাতা ফুটবল লিগের ডার্বিতে জিতলেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি মোহনবাগান। আফসোস হলেও হতাশ হননি সদস্যরা।
দুই দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রায় ১০০ বছরের পুরানো, এবং ফিফা এর ক্লাসিক ডার্বি তালিকার বৈশিষ্ট যুক্ত। শুধু তাই নয় বাংলার সংস্কৃতিতেও এর স্থান অস্বীকার করা যায়না। দু'দলেরই পৃথিবী জুড়ে অনুরাগী রয়েছে। দুটো ক্লাব বাঙালি গোষ্ঠীর একটা করে নির্দিষ্ট শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করে। মোহন বাগান মূলত বাংলার পশ্চিমাংশ-এর বিদ্যমান লোকদের প্রতিনিধিত্ব করে (যারা ঘটি নামে পরিচিত), আর ইস্টবেঙ্গল সাধারণ ভাবে পূব-বাংলা থেকে আসা মানুষের সমর্থিত (যারা বাঙাল নামে পরিচিত)।
ইতিহাসের পাতা ওল্টালে চোখে পড়ে, পঞ্চাশের দশক থেকেই ভারতীয় ফুটবলের শীর্ষে থাকা এই দুই দলকে কেন্দ্র করে বাঙালি বিভক্ত। ১৯৬০ সালে মুম্বইয়ের কুপারেজ স্টেডিয়াম রোভার্স কাপের সেমিফাইনালে দেখল এক রুদ্ধশ্বাস লড়াই। আত্মবিশ্বাসের চুড়োয় থাকা তারকাখচিত মোহনবাগানকে উৎসাহ দিতে যেমন মাঠে উপস্থিত ছিলেন গায়ক, সুরকার হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, তেমনই ইস্টবেঙ্গলের সমর্থনে অভিনেতা অশোক কুমার এবং পুত্র রাহুলকে নিয়ে এসেছিলেন শচীন দেব বর্মন। এক গোলে এগিয়ে থাকা মোহনবাগান শেষ পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলের কাছে লক্ষ্মীনারায়ণ ও অরুণ ঘোষের দেওয়া গোলে ১-২ তে হার মানে।
১৯৬১-তেও কলকাতা ফুটবল লিগে তুলসীদাস বলরামের দেওয়া গোলে ইস্টবেঙ্গল জিতে যায় মোহনবাগানের বিরুদ্ধে। ষাটের দশকের শুরুটা ইস্টবেঙ্গলের হলেও পরে মোহনবাগানের স্বর্ণযুগ হয়ে যায়। ১৯৬২ সালে এশিয়ান গেমস চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় ফুটবল দলের দলনায়ক চুনী গোস্বামীর নেতৃত্বে জার্নেল সিং-এর মতো ফুটবলারদের সঙ্গে নিয়ে এই দশকে মোহনবাগান অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। এই সময়ে ছ'বার কলকাতা ফুটবল লিগ, পাঁচ বার আইএফএ শিল্ড, চার বার ডুরান্ড কাপ মোহনবাগানের দখলে আসে।
১৯৬৯-এর আইএফএ শিল্ড মোহনবাগানের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য। তরুণ প্রশিক্ষক অমল দত্ত ভারতীয় ফুটবলের চিরাচরিত আক্রমণাত্মক ২-৩-৫ থেকে সরে এসে রক্ষণকে দৃঢ় করতে দল সাজালেন ৪-২-৪ এ। নঈমুদ্দিন ও ভবানী রায়কে দু'প্রান্ত দিয়ে ওভারল্যাপে তুলে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে সারা ক্ষণ ব্যস্ত রাখলেন। সেই সুযোগে নবাগত প্রণব গঙ্গোপাধ্যায় দু'টি এবং সুকল্যাণ ঘোষদস্তিদার একটি গোল করে যান। ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক থঙ্গরাজের পক্ষে ম্যাচটা ছিল খুবই দুর্ভাগ্যজনক। টাইট মার্কিং-এ থাকা কান্নন কোনওক্রমে একটা গোল পরিশোধ করতে পেরেছিলেন। মোহনবাগান জয়ী হয় ৩-১ গোলে। স্কোরলাইনের চেয়েও ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় অমল দত্তর নতুন ফর্মেশনের সফল প্রয়োগে।
ষাটের দশক মোহনবাগানের হলে সত্তরের দশক ইস্টবেঙ্গলের। এই দশকের প্রথম পাঁচ বছর মোহনবাগানকে দাঁড়াতেই দেয়নি ইস্টবেঙ্গল। ১৯৭০ থেকে ১৯৭৫ এবং ১৯৭৭-এর কলকাতা ফুটবল লিগ, ছ'বার আইএফএ শিল্ড, তিন বার ডুরান্ড জয়ের শিরোপা লাল-হলুদ শিবির ছিনিয়ে নেয়। ১৯৭৮-এর লিগে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন মোহনবাগানের। ১৯৭৬-এর মতো এই মরসুমের ডার্বিতেও মোহনবাগান জয়ী হয়। ২২ ম্যাচে ৮০ গোল। বাংলার সব রত্ন ফুটবলার সবুজ-মেরুন শিবিরে। গৌতম সরকার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যাম থাপা, সুধীর কর্মকার, সুভাষ ভৌমিক, সুব্রত ভট্টাচার্য, প্রদীপ চৌধুরী, শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়, কম্পটন দত্ত, শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায়, হাবিব, আকবর, মানস ভট্টাচার্য, বিদেশ বসু প্রমুখ।
১৯৭৫-এর আইএফএ শিল্ডের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের সুরজিৎ সেনগুপ্ত, শ্যাম থাপা, রঞ্জিত মুখোপাধ্যায়, শুভঙ্কর সান্যালরা একের পর এক গোল করে মোহনবাগানের গৌরব তছনছ করে দিয়ে যান। প্রশান্ত মিত্রকে পরিবর্ত হিসেবে গোলে দাঁড় করিয়েও ইস্টবেঙ্গলের গোল আটকাতে পারেনি মোহনবাগান।৫-০ গোলের ব্যাবধানের এই ম্যাচটিই এখন পর্যন্ত কলকাতা ডার্বির সবচেয়ে বড় ব্যবধান। এই ম্যাচের পর নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যায় মোহনবাগান তাঁবুতে। কয়েক জন ফুটবলার পালিয়ে গঙ্গার ঘাটে নৌকায় রাত্রি যাপন করতে বাধ্য হন। একাধিক ফুটবলার ক্লাব ছেড়ে চলে যান। পরাজয় মানতে না পেরে পরজন্মে ফুটবলার হয়ে এর প্রতিশোধ নেবেন বলে সুইসাইড নোটে লিখে নিজেকে শেষ করে দেন সমর্থক উমাকান্ত পালধি।
এই বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছিল ২২ বছর পর ১৯৯৭-এর ফেডারেশন কাপ সেমিফাইনালের ডার্বিতে। ডার্বির দীর্ঘ ইতিহাসে স্মরণীয় এই ম্যাচ। দুই কোচ পি কে বন্দ্যোপাধ্যায় আর অমল দত্তের বাক্যুদ্ধ প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে এমন পর্যায়ে পৌঁছে দেয় যে, তার টানে যুবভারতী স্টেডিয়ামে চলে আসেন রেকর্ড সংখ্যক ১ লক্ষ ৩১ হাজার দর্শক। এখনও পর্যন্ত ভারতীয় যে কোনও ক্রীড়ার সবচেয়ে বেশি দর্শক-সংখ্যা এটাই। ম্যাচ ঘিরে এতটাই টেনশন তৈরি হয়েছিল যে, তদানীন্তন ক্রীড়ামন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীকে মাইক হাতে মাঠে নেমে পড়তে হয়। পি কে ব্যানার্জির ভোকাল টনিক, অমল দত্তের থ্রি-ব্যাক ডায়মন্ড সিস্টেম তাতিয়ে দেয় দর্শকদের। এই সিস্টেমে এক সঙ্গে ৭-৮ জন ফুটবলার তরঙ্গের মতো ওঠানামা করে। কোয়ার্টার ফাইনালেই চিমাকে সঙ্গে নিয়ে অমল দত্ত চার্চিল ব্রাদার্সকে ৬-০ গোলে চূর্ণ করে আসেন। আশা ছিল, ১৯৬৯-এর মতো এ বারও তিনি তার নতুন সিস্টেমে ডার্বিতে বাজিমাত করবেন। সাফল্যের ব্যাপারে এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে, ম্যাচের আগে ইস্টবেঙ্গলের বাইচুংকে 'চুংচুং', স্যামুয়েল ওমোলোকে 'ওমলেট' বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্যও করেন। এটাই বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে তাঁর দলে। নিজের দল ও সমর্থকদের তাতাতে গিয়ে তেতে যায় ভাইচুং, ওমোলোরা। বাইচুং ভুটিয়া হ্যাটট্রিক করে ডার্বিতে ইতিহাস গড়েন। নাজিমুল হকও একটা গোল পান। ১-৪ গোলের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় অমল দত্ত ও তার দলকে। একটা গোল পেলেও চিমা আটকে ছিলেন মুসার কাছে। ডার্বিতে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন বাইচুং ভুটিয়া৷ তার ১৯টি গোলের মধ্যে ১৩টি লাল-হলুদ ও ছ'টি মেরুণ-সবুজ জার্সিতে করেছেন৷
কলকাতা ডার্বির প্রসঙ্গ উঠলে ১৯৮০-র ১৬ অগস্টের দুই প্রধানের লিগের ম্যাচটির কথা আসতে বাধ্য। সেই কলঙ্কজনক দিনে ইডেনে ১৬ জন দর্শক পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন খেলা দেখতে এসে।
এক সময় চায়ের দোকানে, বাসে-ট্রামে, পাড়ার মোড়ে বাঙাল-ঘটির লড়াই ছিল দেখার মতোই। লাল-হলুদ, সবুজ-মেরুনের বেদনা-উল্লাস, ইলিশ-চিংড়ির দ্বৈরথ, পালতোলা নৌকা-মশালের শোভাযাত্রা, মাউন্টেড পুলিশের তাড়া, রাত জেগে টিকিট না পেয়ে গ্যালারি টপকে ঝুঁকি নিয়ে মাঠে ঢোকা, প্রিয় দলের পরাজয়ে তীব্র হতাশা, পদপিষ্ট হয়ে সমর্থকদের জীবন সংশয়, সাহিত্যে সঙ্গীতে চলচ্চিত্রে স্থান করে নেওয়া ঘটি-বাঙালের দ্বন্দ্বযুদ্ধের অসংখ্য চিত্র বাঙালি মননে তৈরি হয়েছে একশো বছর ধরে। মাছের বাজারেও তার প্রভাব পড়ত প্রখর ভাবেই। মোহনবাগান জিতলে চিংড়ি আর ইস্টবেঙ্গল জিতলে ইলিশ মাছের দাম আকাশ ছোঁয়া। যদিও আজকের দিনে দুটোই আকাশ ছোঁয়া কিন্তু আজ আর ডার্বি সেভাবে বাঙালির মনে আঁচড় কাটে না। সেই উন্মাদনা, খেলোয়াড় হাইজ্যাকের মত ঘটনা আজ আর কাগজের হেডলাইন হয়ে ওঠে না। ইতিহাসের কালোক্রমে অনেক জল বয়ে গেছে।
তবে বাঙালি নস্টালজিক। তাই উন্মাদনা কমলেও ম্যাচের দিন এখনও ভরে ওঠে গ্যালারি। ডার্বি কানে এলেই শুরু হয়ে যায় ফিসফাস। জানা যায় বাংলা ডুবে আছে ফুটবলেই।
লেখকঃ ঋদ্ধি রীত