কয়েকদিন ধরেই বিকেলের দিকে কলকাতার বুকে আছড়ে পড়ছে কালবৈশাখী। প্রচন্ড গরমের হাত থেকে ক্ষনিকের স্বস্তি মিলছে এই বৃষ্টিতেই। সারাদিন ভ্যাপসা গরমের পর এই বৃষ্টিতে গাছপালা এবং রাস্তাঘাটও যেমন হচ্ছে পরিষ্কার তেমনই হচ্ছে স্নিগ্ধ। কিন্তু বেশি বৃষ্টির ফলে রাস্তায় ছোটবড় খানাখন্দগুলি জলে ভরে তৈরী হচ্ছে ওয়াটার পকেট। আর সেই খানাখন্দের জমা জলেই জন্ম নিচ্ছে ডেঙ্গু মশার লার্ভা। এমনিতেও আমাদের অসচেতনতার দরুন আমরা নিজেরাই যেখানে সেখানে নারকেলের খোলা, মাটির ভাঁড় প্রভৃতি ফেলে রাখি। সেই সব সামগ্রীর উপর জল জমে এবং সেখানেও জন্মায় এডিস এজিপ্টি মশার লার্ভা।
বর্ষা আসতে ঢের দেরি হলেও ইতিমধ্যেই মাঝে মাঝে যা বৃষ্টি হচ্ছে তাতে ডেঙ্গু মশার হঠাৎ বৃদ্ধি ঘটার আশংকা রয়েছে| তাই এবার বর্ষা আসার আগে থেকেই পুরসভা থেকে ডেঙ্গু সংক্রান্ত সবরকমের সতর্কতা অবলম্বন করতে চাইছে। পুরসভার উদ্যোগে নিকাশি নালা থেকে আবর্জনা অপসারণ, জঞ্জাল দূরীকরণ, যেখান সেখান থেকে জমা জল দূর করা প্রভৃতি কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দেওয়া হয়েছে। বড় বিল্ডিং এর অধিকারীদের সাথেও কথা বলা হয়েছে যাতে আবাসনের কাছাকাছি কোথাও জমা জল না থাকে। জল ও জঞ্জাল একত্রিত হলে সেখানে মশার বংশবৃদ্ধির এক অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বুধবার এই নিয়ে একটি বৈঠকে এইসব কথা আলোচনা করা হয়েছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ এখন থেকেই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সচেতনতা প্রচার শুরু করেছেন। এই কাজে কি কি সুবিধা হয়েছে, কি কি অসুবিধা তৈরী হচ্ছে, এই কাজে কতটা অগ্রগতি হলো এইসব খতিয়ে দেখার জন্য ইতিমধ্যেই প্রতিমাসে বৈঠকে বসছেন ডেপুটি মেয়র। পরিবেশের খামখেয়ালির জন্য বসন্তেই যেভাবে কালবৈশাখী হানা দিয়েছে তাতে রোগজীবাণুর হানা বাড়বে সেটাই স্বাভাবিক। এলাকায় বিশেষ নজরদারি করাও শুরু করেছে পুরসভা।
বুধবার বৈঠকে পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ, নিকাশি সহ বিভিন্ন কর্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এসমস্ত এলাকায় যদি কোথাও কোনো আবর্জনা থাকে তাহলে তা পুরসভাই পরিষ্কার করিয়ে দেবে এবং সেই বিল তারা এরপর মালিকপক্ষের হাতে তুলে দেবে। কিছুক্ষেত্রে প্রশাসনিক জটিলতার কারণে যদি নিকাশি বিভাগ কাজ করতে না পারে, সেইসব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য দফতরকে জানালে তারা ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছে।