বাঙালি রসনায় শুধু মাছ নয়, মাংসও সমানভাবে নিজের জায়গা আধিপত্যের সঙ্গে দখল করে রেখেছে। রোববার মানে বাঙালির পাতে পাঁঠা মাংস ছাড়া অন্য কিছু ভাবাই যায় না! নতুন খাবার চেখে দেখতে বাঙালির কোন অসুবিধা নেই। ভালো খাবারের সন্ধান রাখতে বাঙালির জুড়ি মেলা ভার। গন্ধে গন্ধে সে ঠিক সেখানে হাজির হবেই। শুধু নিজে নয়, সঙ্গে বন্ধু-বান্ধবদের নিয়েও হাজির হওয়া চাই।
পুরনো কলকাতার গন্ধ মাখা যে কটা মাংসের দোকান রয়েছে তার মধ্যে শ্যামবাজারের "গোলবাড়ির কষা মাংসের" দোকান বিখ্যাত। নাম "গোলবাড়ি" হলেও বাড়িটি কিন্তু মোটেও গোল নয়। শ্যামবাজারের পাঁচ মাথার মোড়ে বিধানসরণির রাস্তায় পড়বে এই দোকান।
দমবন্ধ করা পরিবেশে ছোট দোকানে সকাল সন্ধ্যায় লোক উপচে পড়ে। তেলে ভাসছে নরম, তুলতুলে মাংস। গাঢ় খয়েরি রঙ এবং সঙ্গে গরম মশলার সুগন্ধ। এক আলাদাই মৌতাত তৈরি করে। তার টানে কলেজ পড়ুরা, অফিস ফেরত যাত্রী তার সঙ্গীর সঙ্গে, প্রেমিক যুগল এখানে এসে ভীড় জমায়। সুস্বাদু খাবারের সঙ্গে চলে দেদার আড্ডা।
গোলবাড়ি কষা মাংসের দোকানের প্রতিষ্ঠাতা অরোরা পরিবার। এঁরা মূলত পাঞ্জাবি পরিবার। প্রায় একশো বছর বয়স হতে চলল এই দোকানটি। ১৯২৩ সালে দোকানটি শ্যামবাজারে নির্মিত হয়। পাঞ্জাবি হলেও এতোদিন কলকাতায় থাকায় খাবারে পুরোপুরি বাঙালি স্বাদ। পাঞ্জাবি রান্নার গন্ধ পাওয়া যায় না বললেই চলে। এতো বছর ধরে একই রকমের স্বাদ বহন করে চলেছে।
গোলবাড়ির অন্যান্য জনপ্রিয় আইটেম গুলির মধ্যে রয়েছে ফ্রিশফ্রাই, চিকেন কাটলেট, ব্রেনচপ এবং এগ কাটলেট। তবে গোলবাড়ি মানেই কষা মাংস। মাংসের চর্বি গলিয়ে গ্রেভির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়। ফলে স্বাদ হয় স্বর্গীয়। একবার খেলে বারবার আসতে হবে গোলবাড়ির কষা মাংস খেতে।