পেটকাটি, চাঁদিয়াল, মোমবাতি, বগ্গা – এক সময় মানুষের কাছে খুব পরিচিত ছিল এই নামগুলি। সে বিশ্বকর্মা পুজোই হোক বা ১৫ই আগস্ট, আকাশ ছেয়ে থাকত ঘুড়িতে। আশপাশ থেকে শুধু একটাই আওয়াজ কানে আসত “ভো-কাট্টা”। আর তখন ঘুড়ি ওড়ানো বা মাঞ্জা দেওয়াও ছিল একটি শিল্প। বর্তমান যুব প্রজন্মের বাল্যাকাল কেটেছে এই ঘুড়িদের নিয়েই। সময় বদলেছে তাই বদলে গেছে মানুষের ধ্যান ধারণাও। তাই স্মার্ট ফোনের যুগে ছোট ছোট শিশুদের, অতিরিক্ত সময় কাটে হয় মোবাইলে ফোনে, নয় কম্পিউটারে গেম খেলে। তাই আকাশ আজ ফাঁকা, শোনা যায় না তারস্বরে চিৎকার করা সেই জয়ধ্বনী - “ভো-কাট্টা”। সময়ের পরিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে ঘুড়ি ওড়ানো।
জিয়ো বাংলা শারদ সম্মান ২০১৯ উপলক্ষ্যে আমাদের স্টুডিওতে উপস্থিত ছিলেন দর্জিপাড়া সার্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতির দুইজন মিডিয়া কোঅর্ডিনেটার সন্দীপ বোস ও দেব কুমার, আর উপস্থিত ছিলেন পূজা কমিটির কোষাধ্যক্ষ অমিত সিং। সঞ্চালক সিঞ্চিতার সাথে তাদের পুজোর বিষয়ে জানলাম আমরাও। ১৯৩২ সাল থেকে শুরু হয় এই পুজোর পথচলা। তারপর দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে অনেকগুলি বছর। পরাধীনতার গ্লানি ভুলে স্বাধীন হয়েছে ভারতবর্ষ। তবে পরাধীনতার আঁচ ছুঁতে পারে নি এই পূজাকে।
৮৮ তম বর্ষে পদার্পন করল তাদের পুজো। আর এই ঘুড়ি কে নিয়েই শিল্পী প্রবীর সাহার ভাবনায় সেজে উঠছে দর্জিপাড়া সার্বজনীন দুর্গোৎসবের পূজা মন্ডপ। থিমের সাথে মিলিয়ে প্রতিমার রুপ দিচ্ছেন শিল্পী সৌমেন পাল। মহালয়ায় দুস্থশিশুদের বস্ত্র বিতরণ করার মধ্যে দিয়ে শুরু হবে দেবীপক্ষের সূচনা। চতূর্থীর দিন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের হাত ধরে উদ্বোধন হবে তাদের পুজোর। সপ্তমির দিন পথশিশুদের জন্য থাকবে মহাভোজের আয়োজন। অষ্টমির দিন ক্লাব কর্তৃপক্ষোর তরফ থেকে ‘নর নারায়ণ সেবা’- র মাধ্যমে সকল দর্শনার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে মায়ের ভোগ।
পুজোর কটা দিন সুরক্ষার বেড়াজালে বেঁধে দেওয়া হবে মন্ডপ প্রাঙ্গন। সিসিটিভির তত্ত্বাবধানে থাকবে গোটা পুজো। সদ্য মা হওয়া মহিলাদের জন্য থাকবে “ব্রেস্ট-ফিডিং জোন”। এমনকি শিশুদের জন্য আলাদা করে “প্লে জোন”-এর ব্যাবস্থাও করা হয়েছে পূজা কমিটির তরফ থেকে। তাই এই পুজোর সাক্ষি থাকতে, মন্ডপে থাকবে জিয়ো বাংলা। আপনারা আসছেন তো?