মাল্টিটাস্কিং-এ বিপদ

যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। কথাটি নারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও পুরুষরাও কিন্তু কম যাননা। মাল্টিটাস্কিং-এর দৌড়ে এখন পিছিয়ে নেই কেউই। একটা গোটা দিনে মাত্র ২৪ ঘন্টা সময়- তার মধ্যে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর জন্য বরাদ্দ। তাহলে হাতে রইলো মাত্র ১২ ঘন্টা। এরই মধ্যে রয়েছে করার জন্য কত কাজ। তাহলে স্বাভাবিক জীবনে চলার জন্য আপনাকে মাল্টিটাস্কার তো হতেই হবে। মাল্টিটাস্কিংই এখন জীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে ঘরেই হোক বা বাইরে। মাল্টিটাস্কিং এড়ানো খুবই কঠিন। এড়ানো দূরে থাকে বর্তমান যুগের ইঁদুরদৌড়ে টিকে থাকতে গেলে আপনাকে মাল্টিটাস্কার হতেই হবে। কিন্তু এখানেই ঘটছে বিপত্তি। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, মাল্টিটাস্কিংয়ের ফলে ঘটে এমন কিছু পরিবর্তন যা মানুষের শরীর ও মনের উপরে এফেক্ট ফেলে।

জানা গেছে, মাল্টিটাস্কিং এর অভ্যেস থাকলে তার মস্তিষ্কের উপর চাপ পড়ে বেশি। ফলে ধীরে ধীরে ব্রেনের কার্যকারিতা কমে যাওয়া এবং স্মৃতিশক্তি হ্রাস,  মনোযোগে অভাব,  দ্রুত কাজ করার ক্ষমতা কমে যাওয়া প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে,  দীর্ঘদিন মাল্টিটাস্কিং করার ফলে ব্রেনের কার্যকারিতা কমতে থাকে। কারণ ব্রেনের কাজ হলো এক একবারে এক একটি আলাদা জিনিসের উপর ফোকাস করা। তাই একসাথে অনেকগুলো কাজ করতে থাকলে কোনো কাজই ঠিকভাবে করা হয়ে ওঠে না।

মাল্টিটাস্কিং থেকে হওয়া নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলি হলো,

১) লো ক্যালোরিযুক্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া।

২) সারাদিনে ২ থেকে ৩ কাপ গ্রিন টি। দুধ ও চিনি ছাড়া।

৩) টাটকা ফল খাওয়ার অভ্যেস করা ভালো।

দিনে ২ থেকে ৪টি করে বাদামজাতীয় জিনিস খাওয়া উচিত যেমন আমন্ড, আখরোট প্রভৃতি।

৪) সপ্তাহে ২ বার তেলযুক্ত মাছ খাওয়া উচিত।

৫) টাটকা শাকসবজি, বিনস প্রভৃতি।

৬) প্রতিদিন এক টুকরো করে ডার্ক চকোলেট খাওয়া ভালো।

শুধু খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আনলেই শরীর সুস্থ থাকবে তা কিন্তু নয়। এর সাথে সাথেই কিছু ব্যায়াম, হালকা হাঁটা,  জগিং প্রভৃতি করা উচিত। এছাড়াও বয়স হওয়ার সাথে সাথে শরীরে নানা মিনারেল ও ভিটামিনের অভাব দেখা দিতে থাকে। সেইসব ক্ষেত্রে বাইরে থেকে না সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়। স্ট্রেসকে একদমই মনে জায়গা দেবেন না। রাতে ভালো করে ঘুমোন। প্রয়োজন পড়লে অনিদ্রার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

মাল্টিটাস্কিং এড়ানোর জন্য দিনের শুরুতেই কাজের একটি লিস্ট বানিয়ে নিন। তারপর যেই কাজটি প্রথমে করা দরকার সেই কাজটি সবার আগে করে নিন। প্রায়োরিটি অনুযায়ী ধীরে ধীরে কাজ শেষ করতে থাকুন। একসাথে অনেকগুলো কাজ করার চেষ্টা করবেন না। এতে আপনার আপাতদৃষ্টিতে কোনো সমস্যা না হলেও আপনার ব্রেনের যে ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে সেটি আপনি পরবর্তী সময়ে টের পাবেন। তাই অযথা একসাথে একগাদা কাজ করে নিজের স্ট্রেস বাড়াবেন না। ধীরে ধীরে শান্তভাবে কাজ করুন। নিজেও সুস্থ থাকুন আর ব্রেনকেও সুস্থ থাকতে দিন।

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...