শ্বাসকষ্ট, দীর্ঘস্থায়ী কাশি আর সেই থেকেই জন্ম নিচ্ছে ফুসফুসের রোগ ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ সংক্ষেপে সিওপিডি। চিকিৎসকদের মতে, শ্বাসকষ্ট এবং কাশি, মাঝরাতে কাশতে কাশতে ঘুম ভেঙে যাওয়া প্রভৃতিই এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ। প্রথমেই সতর্ক না হলে বিপদ ঘনাতে সময় লাগবে না বলে জানালেন চিকিৎসকগন। তাদের মতে, সিওপিডিতে প্রতি ১০ সেকেন্ডে মৃত্যু ঘটছে মানুষের। শুধু বড়রা নয় এই সমস্যা এখন দেখা দিচ্ছে ছোটদের শরীরেও। বাচ্চাদের মধ্যেও এখন শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ছে। প্রথমে এই সমস্যার জন্য ধূমপানকে দায়ী করা হলেও এখন মনে করা হচ্ছে এর জন্য অনেকটাই দায়ী বায়ুদূষণ। দিনদিন কলকাতার বুকে নানাকারণে যেভাবে বায়ুদূষণ বাড়ছে তার প্রভাব পড়ছে মানবজীবনে।
'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(হু)' শোনালো এক ভয়াল বার্তা। তাদের মতে, ২০১৬ সালে সারা বিশ্বে এই রোগীর সংখ্যা ছিল ২৫ কোটি ১০ লক্ষ। 'হু' এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক ব্যক্তি হাসতেও পারতেন না কারণ হাসতে গেলেই শরীরে অতিরিক্ত শ্বাসবায়ুর প্রয়োজন হয় যা তার ফুসফুস সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়। আরেকজন রোগীর বক্তব্য ছিল এই রোগ ধরা পড়ার পর তিনি হেঁটে বাজারে যেতে পারতেন না হাঁপিয়ে যেতেন। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সিওপিডির আগ্রাসনের মানচিত্রে জায়গা করেছে কলকাতাও। শিশু থেকে শুরু করে মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি বা প্রবীণ ব্যক্তি সিওপিডির থাবায় ফুসফুস ছিন্নভিন্ন হচ্ছে তাদের। চিকিৎসকদের কথা মত, ধূমপানের পাশাপাশি ঘরে বাইরের দূষণও কম দায়ী নয়। ঘরের ভিতরের কাঠকয়লা পোড়ার ধোঁয়া থেকে শুরু করে যানবাহনের ধোঁয়া সিওপিডির বীজ লুকিয়ে রয়েছে সবকিছুতেই। পরিবেশবিদদের দাবি, সারাদিনে ৬ ঘন্টা মশা তাড়ানোর কয়েল জ্বালানো ১০০ টি সিগারেট খাওয়ার সমান। এই ধুলো-ধোঁয়া এড়াতে অনেকেই মাস্ক পরে থাকেন। কিন্তু চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই মাস্ক পরে খুব একটা লাভ হয় না। কারণ বাতাসে ভাসমান অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা এতে আটকে যায় না। এইসব ধুলো-ধোঁয়া আটকানোর জন্য এন৯৯ মাস্ক একমাত্র উপকারী। এই মাস্কের মধ্যেই একমাত্র সূক্ষ্ম ধূলিকণা আটকায়।চিকিৎসকদের মতে, ধারাবাহিকভাবে কাশি বা সর্দি চলতে থাকলে তা অগ্রাহ্য করা উচিত হবে না। এইধরণের রোগ তিন সপ্তাহের বেশি চলতে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা জানালেন চিকিৎসক রাজা ধর।