একজন লেখক, একজন গায়িকা- এই ছিল দু'জনের সংসার| দুজনে মিলে দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন। খ্যাতি এসেছে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই। লেখক বুদ্ধদেব গুহ লিখেছেন মূলত প্রকৃতি বিষয়ক রচনা। তাঁর সৃষ্ট চরিত্র 'ঋজুদা' বাঙালি কিশোরদের সঙ্গে সঙ্গে বড়দেরও মন জয় করে নিয়েছিল। বুদ্ধদেব গুহ'র লেখনীর মধ্যে ছিল অদ্ভুত এক সারল্য। ছিল ঘরোয়া আমেজ, তাই পাঠক সমাজে আদৃত হয়েছিল তাঁর লেখাগুলি। প্রথম জীবনে শুধুমাত্র শিকার বিষয়ক লেখালেখিতেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। পরে মূলধারার সাহিত্য রচনা করেন। 'একটু উষ্ণতার জন্য', 'বাবলি', 'কোজাগর', 'কোয়েলের কাছে', 'গুঞ্জ ফুলের মালা', 'হলুদ বসন্ত' প্রভৃতি তাঁর জনপ্রিয় উপন্যাসগুলোর অন্যতম। তাঁর লেখা 'মাধুকরী' উপন্যাসটি যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছিল পাঠক মহলে। ছিল বেস্ট সেলার বহুদিন যাবৎ।
এহেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহকে এ বছর 'ডি লিট' সম্মানে ভূষিত করতে চলেছে টেকনো ইন্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। চলতি মাসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসবে লেখককে ডি লিট দিয়ে সম্মানিত করা হবে। ৮৫ বছর বয়সী এই লেখক খুশি হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁর প্রকৃত পুরস্কার তাঁর পাঠকমহল বলেই তিনি মনে করেন। তবে তাঁর অগণিত পাঠক এই সম্মানে যথেষ্ট খুশি হবেন বলাই বাহুল্য।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সাহিত্যিক হলেও তিনি ছিলেন কৃতি একাউন্ট্যান্ট। সৃষ্টি করেছিলেন নিজস্ব ঘরানার লেখনী। মস্তিষ্কের তুলনায় হৃদয়কে অগ্রাধিকার দিতেন তাঁর লেখনীতে। এছাড়া সুগায়ক ছিলেন। গাইতেন রবীন্দ্রসংগীত। টপ্পা আঙ্গিকের গান তাঁর গলায় আলাদা মাধুর্য পেত। স্ত্রী ঋতু গুহ ছিলেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী। ইউরোপ, ইংল্যান্ড, কানাডা, আমেরিকা, হাওয়াই, জাপান, থাইল্যান্ড, পূর্ব আফ্রিকায় ঘুরেছেন তিনি এবং যথেষ্ট অভিজ্ঞতার ঝুলি সংগ্রহ করে এনেছেন সেখান থেকে তা বলাই বাহুল্য।