নতুন নয় এই করোনা ভাইরাস !

নতুন নয় এই করোনা ভাইরাস !

করোনা ভাইরাস  এখন বিশ্বের এক চরম মহামারী , যার প্রকোপ একসাথে গোটা বিশ্বকে মৃত্যু মিছিলের প্রতিযোগিতায় সামিল করেছে।  আরো আশ্চর্যের যে এই ভাইরাসটির দমনে কোনো প্রতিষেধক নেই।তাও  বিজ্ঞানী, চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন এই ভাইরাস দমনে।  কিন্তু এই ভাইরাস   নতুন  নয় । ভাইরাস তার ক্রমাগত  চরিত্র বদলায়।  আর এমনটাই এখানে হয়েছে।  চরিত্র  বদলে আরও হয়ে  শক্তিশালী এসেছে। আজ সেই কথাই  জানাবো।

করোনার প্রথম  আগমন  ঘটে ১৯৩১ সালে। ডাঃ অস্কার শেফ্রায়েড নামের এক পশু চিকিৎসক তাঁর গবেষণায় প্রথম একটি ভাইরাসের উল্লেখ করেন। সেখানে এই নতুন ভাইরাসকে ‘ইনফেকশাস ব্রংকাইটিস ভাইরাস’ বলে উল্লেখ করেন । যার  রকম খানিক এমন -  সরাসরি ফুসফুসকে  আক্রমণ  করে ; ফলস্বরূপ শ্বাসকষ্ট ও নানাবিধ অসুখের সমাহার, রোগপ্রতিষেধকের ক্ষমতা না থাকলে মাল্টি অর্গান ফেইলিওর । সেই প্রথম  জানা গেলো  করোনা ভাইরাসের নাম। অবশ্য তখনও অবধি এটি মূলত পশুদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল । কিন্তু প্রায়  বছর তিরিশেক পর,  ১৯৬৫-তে  মানুষের শরীরে এক ভাইরাসের প্রকোপ দেখা যায়। যা মূলত মানুষের শ্বাসযন্ত্রে আক্রমণ করে। যেখান থেকে সাধারণ সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা যায়।  অন্যান্য জ্বরের মতো এটাও ছিল সাধারণ।  কিন্তু এই  আবিষ্কৃত ভাইরাসের নাম প্রথমে রাখা হয় ‘বি-৮১৪’।  পরে জিন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এটিও  ভিন্নরূপী করোনা ভাইরাস। যদিও মারণ ক্ষমতা তখনও প্রকাশ পায়নি।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে  ক্রমাগত , পরিবেশ , ইম্যুনিটির সাথে পাল্লা দিয়ে করোনাও তার চরিত্র বদলাতে থাকে। যার প্রকাশ ঘটে ২০০২-০৩ সাল নাগাদ। স্থান সেই  দক্ষিণ চিন। তবে ক্রমে , দুই আমেরিকা-সহ ইউরোপ, এশিয়ার অনেক জায়গাই এই রোগে আক্রান্ত হয়।  নাম ছিল  ‘সার্স’ -‘সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম’ ।

তবে এখন  আরও পাঁচ রকমের করোনার প্রকারভেদ পাওয়া গেছে। এখনকার ভাইরাসটির নাম সার্স-কোভ-২। এটি প্রধানত বিটা-করোনা ভাইরাস প্রজাতির অন্তর্গত। মূল জেনেটিক উপাদান হল - RNA। শুধু শ্বাসকষ্ট নয়, এবার অন্যান্য আরও উপসর্গ নিয়ে হাজির হল সে ।  প্রথম আবিষ্কৃত হওয়ার পর   শৈশব থেকে সে তার  চরিত্র বদলে আজ বার্ধক্যে এসেছে নতুন শক্তি নিয়ে  । যা  ২০১৯ এর  শেষ থেকে বিশ্বে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। বিজ্ঞানী, ডাক্তার, গবেষক— সবাই চেষ্টায় আছেন প্রতিষেধক খোঁজার।তবে আপাতত এর প্রতিরোধের উপায় হলো ছোঁয়াচ  থেকে দূরে থাকা , স্পষ্ট করে বলতে গেলে সোশ্যাল ডিস্টেন্স রক্ষা করলে  স্টেজ ৩ থেকে বিরত হওয়া যেতে পারে।  তাই প্রশাসন হাজারো চেষ্টা করলেও  সতর্কীকরণ প্রয়োজন । না হলে এই ভাইরাস আরো ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করবে। যা কাম্য নয়।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...