দেশে সামগ্রিক আর্থিক মন্দার মধ্যেও রিয়েল এস্টেট ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার সন্তোষজনক পশ্চিমবঙ্গে। সেই বৃদ্ধির হারকে আরও প্রসারিত করতে রাজ্য সরকার নির্মাণ শিল্পের বিভিন্ন সামগ্রী ও যন্ত্র উৎপাদনের জন্য পানাগড়ে একটি পার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। মঙ্গলবার, কলকাতায় বণিকসভা সিআইআই আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এমন বার্তাই পাওয়া গেল শিল্পবাণিজ্য ও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের কাছ থেকে।
এ ব্যাপারে তিনি সিআইআই’কে সহায়তা করার জন্য আর্জি জানিয়ে বলেছেন, সিআইআই পশ্চিমবঙ্গ উন্নয়ন নিগমকে প্রস্তাব দিলে পানাগড়ে প্রস্তাবিত পার্ক গড়ে তুলতে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে বিনিময় উপদেষ্টা নিয়োগ করা হবে। যদি ১০০ একরে আগ্রহী সমস্ত সংস্থাকে জমি বরাদ্দ না করা যায়, সে ক্ষেত্রে আমরা আরও ১০০ একর জমি দিতে রাজি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত মার্লিন গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান সুশীল মোহতা জানিয়েছেন, বর্তমানে কলকাতা ও তার অন্তর্বর্তী এলাকাগুলির সস্তার আবাসনগুলিতে ৪০০০ ইউনিট নির্মাণ করছেন তারা, যার সবগুলিই বুকড্। তার বক্তব্য, শ্রীরাম প্রপার্টিজের ২০০০-এর বেশী ইউনিট ইতিমধ্যেই বুকড্ হয়ে গিয়েছে কোন্নগরে। এর ফলে কলকাতার আশেপাশের এই এলাকাগুলিতে প্রবল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। ভারতীয় অর্থনীতির মন্দার মধ্যেও আমরা ভালো কাজ করছি। শপিং মল ভ্যাকান্সি কলকাতায় ৩.৭ %, যা দেশের মধ্যে সব থেকে কম। লজিস্টিক্স্ ক্ষেত্রে লগ্নি টানতে আমরা আকর্ষণীয় নীতি এনেছি।
অন্যদিকে, নির্মাণ শিল্পের জন্য যন্ত্র প্রস্তুতকারক জার্মান সংস্থা শুইং স্টেটার রাজ্যে ৫০ কোটি টাকা লগ্নি করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে। এ প্রসঙ্গে শুইং স্টেটার (ইন্ডিয়া) প্রাইভেট লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান আনন্দ সুন্দরাশেন জানিয়েছেন, আমরা পানাগড়ে ৫ একর জমিতে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র ও মাউন্টিং ইউনিট গড়ে তুলতে পারি।
অমিত মিত্র আরও জানিয়েছেন, পানাগড়ে নির্মাণ শিল্পের সামগ্রী নির্মাণের পার্ক তৈরী হলে বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি নির্মাণ শিল্পের ক্ষেত্রেও সম্পূর্ণ স্বনির্ভর হয়ে উঠবে পশ্চিমবঙ্গ। রিয়েল এস্টেটের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে কোনো প্রকল্প ব্যাঙ্ক অনাদায়ী ঘোষিত হয়নি, সব থেকে বেশী ব্যাঙ্ক অনাদায়ীর ঘটনা ঘটে উত্তর ও পশ্চিম ভারতে। এ কারণেই রিয়েল এস্টেট-এ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ আদর্শ স্থান। বছরে ১৫,০০০ আবাসন বিক্রি হচ্ছে কোলকাতায়। হাওড়া, রিষড়া, কোন্নগরের মতো অঞ্চলগুলিতে সস্তার আবাসন বিক্রির হার বিপুলভাবে বেড়েছে। ফলস্বরূপ অবিক্রিত আবাসনের সংখ্যা ২৩ % কমে গিয়েছে।
পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে অমৃতসর-ডানকুনি ডেডিকেটেড করিডর সংলগ্ন এলাকায় ২,৬৬৬ একর জমিতে শিল্প হাব গড়ে তোলার পরিকল্পনায় রয়েছে রাজ্য সরকার।