সম্মোহনী শক্তি এবং যাবতীয় শক্তির আধার বলে মনে করা হতো রানী ক্লিওপেট্রাকে। প্রাচীন মিশরের ইতিহাসের এক বিস্ময়কর নাম ক্লিওপেট্রা। তিনি পরমাসুন্দরী হিসেবে ইতিহাসে খ্যাতিসম্পন্না না হলেও তাঁর বুদ্ধিমত্তা ও প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তিই তাঁকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মহিলাদের তালিকায় নাম লিখিয়েছে।মাত্র ৩৯ বছরের জীবনেই নানা অত্যাশ্চর্য ঘটনা ঘটিয়ে গেছেন তিনি। তখনকার সময় যেসব কাজ একজন বীর পুরুষের পক্ষেও করা অসম্ভব ছিল সেইসব কাজ একজন মহিলা হয়ে করার ক্ষমতা রাখতেন এই নারী। প্রেম ও মৃত্যু এক হয়ে গেছিলো এই রহস্যময়ী নারীর জীবনে। তার জীবনে প্রেমের এতটাই প্রাধান্য ছিল যে প্রয়োজনে প্রচন্ড হিংস্র হতেও দ্বিধাবোধ করতেন না তিনি।
রোমান রাজনীতির এক সংকটময় সময়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন রানী ক্লিওপেট্রা। রোমের পূর্ব প্রান্তের রাজ্যগুলো দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা সেনানায়ক মার্ক অ্যান্টনি থাকতেন রানী ক্লিওপেট্রার সাথে। প্রায় ২০৫০ বছর আগে মারা যান এই যুগল। অনেকবছর ধরে খোঁজখবর চালিয়েও এতদিন মেলেনি তাঁদের সমাধির হদিস। কিন্তু সম্প্রতি নাকি আলেকজান্দ্রিয়া থেকে ১৮ মাইল ভিতরে তাপোসিরিস শহরে খোঁজ মিলেছে তাঁদের সমাধির। প্রত্নতত্ত্ববিদ জাহি হাওয়াসের দাবি অনুযায়ী, ইতিহাসের বহুচর্চিত এই জুটিকে এই স্থানেই সমাধিস্থ করা হয়েছিল। ইতিহাসবিদদের মতে, ঠিকমত খোঁজ হলে সেখান থেকে মিলতে পারে প্রাচীন মুদ্রা ও স্বর্ণপেটিকা।
ক্লিওপেট্রার মৃত্যু নিয়ে রয়েছে নানা মিথ। শোনা যায়,সাপের কাপড়ে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। কখনো বা বলা হয়, ক্লিওপেট্রার সাথে প্রেমের সম্পর্ক থাকার কারণে এই যুগলকে হত্যা করা হয়েছিল। অন্য একটি সূত্র থেকে জানা যায়, অক্টাভিয়ান বাহিনীর সাথে যুদ্ধে পরাজয়ের পর আত্মঘাতী হন অ্যান্টনি। তাই তাঁদের সমাধির খোঁজ মিললে সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে এমনটাই মনে করছেন ইতিহাসবিদরা।
কিংবদন্তি ক্লিওপেট্রাকে নিয়ে তৈরী হয়েছে নানা গল্প, হয়েছে নানা সিনেমা। বরাবরই তার জীবনের থেকে বেশি মৃত্যুর সাথে জড়িয়েছে নানা মিথ। তাই প্রাপ্ত সমাধিটি যদি সত্যিই সুন্দরী ক্লিওপেট্রার হয় তাহলে তার মৃত্যু সম্পর্কে অনেক কথা জানা যাবে বলে আশা প্রত্নতাত্ত্বিকদের।